বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

সুজন-নাছির গরম করেছেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২০
  • ১৯৮ বার

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন যেখানেই হাত দিচ্ছেন, সেখানেই হইচই পড়ে যাচ্ছে। অনিয়ম ধরা পড়লেই অনিবার্যভাবে চলে আসছে সদস্য সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নাম। তবে নগরীর ষোলশহর এলাকায় অবস্থিত বিপ্লব উদ্যানের সংস্কার সংক্রান্ত অনিয়মের পর রীতিমতো নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও কেঁপে উঠেছেন।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বিপ্লব উদ্যানকে দুই দশকেরও আগে একটি সবুজ বাগান হিসেবে সাজিয়েছিলেন প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। নির্মল নিঃশ্বাস নিতে আশপাশের মানুষ প্রতিদিনই সেখানে ভিড় করতেন। ২০১৮ সালে সংস্কারের নামে সেই উদ্যানের ভেতরের সব সবুজ কেটে সাফ করার কাজ শুরু হয়। এতে বিপ্লব উদ্যান হয়ে পড়ে ধু-ধু মাঠ। মাঝে বসানো হয় পানির ফোয়ারা আর একটি মিনার। পূর্ব পাশে দ্বিতল শপিংমল নির্মাণ করে নিচে ১৯টি এবং ওপরে ১৫টি দোকান তৈরি করা হয়। জানা যায়, ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান প্রতিটি দোকান ২২ লাখ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে। হাতবদলে কোনো কোনোটির দর গিয়ে ওঠে ৩৫ টাকা পর্যন্ত। সে হিসেবে ইজারাদাররা অন্তত ৭ থেকে সাড়ে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ। ওই টাকার একটি কানাকড়িও চসিক পায়নি। চুক্তি অনুযায়ী বছরে কেবল এক লাখ টাকা পাওয়ার কথা। সেই সঙ্গে মার্কেটের কারণে ওয়াকওয়ে নষ্ট করে ফেলায় বিপ্লব উদ্যানে হাঁটার উপায়টুকু নেই।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন আর সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। একই দলের আদর্শিক নেতা হলেও দুজনের মধ্যে কৌশলগত দূরত্ব ছিল সব সময়। মেয়র হিসেবে নাছিরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেই চেয়ারে প্রশাসক হিসেবে সুজন বসার পর চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখন দুই নেতার দ্বন্দ্বকে ঘিরে দৃশ্যমান। সুজন চট্টগ্রাম নগর রাজনীতিতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী বলে পরিচিত হলেও সরকারি সিটি কলেজকেন্দ্রিক একটি বড় সমর্থক রয়েছে তার। আর নাছির এক সময় আখতারুজ্জামান বাবুর অনুসারী হলেও নব্বইয়ের দশকে নিজেই আলাদা প্ল্যাটফরম তৈরি করে রাজনীতি শুরু করেন।

খোরশেদ আলম সুজন গত ৬ আগস্ট দায়িত্ব নিয়ে কেবল চসিকের রুটিন কাজের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি ফুটপাত থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ, চসিকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ বিভিন্ন কাজেই হাত দিয়েছেন। আর তাতেই প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দুই নেতার দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সে নতুন ৩০০ দোকান মাত্র এক ব্যক্তিকে নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়াকে কেন্দ্র করেও সমালোচনা শুরু হয়েছে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের বিরুদ্ধে। ওই দোকানগুলোরও নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সুজন। শাহ আমানত মার্কেটে আলো প্রবেশের পথগুলো বন্ধ করেও নির্মাণ হয়েছে দোকান। ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে ধরা পড়েছে অনিয়ম। নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় অবস্থিত জিয়া শিশুপার্কের ইজারা নতুন করে নবায়ন না করার ঘোষণা দিয়েছিলেন সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। কিন্তু চীনে এক সফরে গিয়ে পুনরায় ইজারার সিদ্ধান্ত হয়। অথচ এর আগে স্বয়ং আ জ ম নাছির ঘোষণা দিয়েছিলেন শিশুপার্কের স্থাপনা সরিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ওই স্থানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। নতুন চুক্তির পর ইজারাদাররা শিশুপার্কে নতুন করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। ফলে চট্টগ্রামবাসীর একটি স্মৃতিসৌধের স্বপ্ন ক্রমশ দুরূহ হয়ে পড়ছে।

চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘যেখানেই হাত দিচ্ছি সেখান থেকেই অনিয়ম বের হয়ে আসছে। ৩০ লাখ টাকার ওপরের যে কোনো কাজ দরপত্র দিয়ে করার নিয়ম। অথচ এসব কাজের একটিও দরপত্রের মাধ্যমে করা হয়নি।’ এটি রাজনৈতিক চাল কিংবা দ্বন্দ্ব থেকে করছেন কিনা জানতে চাইলে সুজন বলেন, ‘রাজনীতির সুযোগ নেই। আমি তো চসিক নির্বাচনে মনোনয়ন পাইনি। নাছিরও পাননি। আমি তো চসিকে নির্বাচন করব না। তা হলে চালবাজি কিংবা দ্বন্দ্বের কথা আসছে কেন?’

আ জ ম নাছির উদ্দীন আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিপ্লব উদ্যান দীর্ঘসময় সংস্কার না করায় রীতিমতো জঙ্গল হয়ে গিয়েছিল। ফলে সেটি সংস্কার করা দরকার ছিল। সেখানে প্রবেশ মুখে অনেক বড় করে জয় বাংলা লেখা হয়েছে, যা সবার চোখে পড়বে। এসব কথা তো আসছে না। দোকান থেকে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব আয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম শহরকে একটি পর্যায়ে নিয়ে এসেছি, যা দৃশ্যমান।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com