সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৫ অপরাহ্ন

ট্রাম্প নন, নোবেল পুরস্কারের সম্ভাব্য তালিকায় জাসিন্ডা, নাভালনি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০২০
  • ১৯৪ বার

চিকিৎসায় বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর কে বা কারা নোবেল পাচ্ছেন আজ সোমবার সে ঘোষণার মধ্য দিয়ে চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শুরু হচ্ছে। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বাংলাদেশ সময় আজ সোমবার বিকেলে এক অনুষ্ঠানে নোবেল কমিটি এ ঘোষণা দেবে। এ বছর চিকিৎসায় নোবেলের জন্য মনোনীত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান বা সংক্ষিপ্ত তালিকা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। বরাবরের মতো সব নথিপত্র অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে রেখে তা জনসাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখা হয়েছে।

এদিকে, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার সুইডেন থেকে দেওয়া হলেও শান্তিতে দেওয়া হয় নরওয়ে থেকে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার এবার কে পাবেন, সেই ঘোষণা করা হবে আগামী শুক্রবার। তবে সম্ভাব্য নাম ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিশ্বজুড়ে এখন অনুমান ও আলোচনা তুঙ্গে। চলতি বছরে ‘২০২০ নোবেল পিস প্রাইস বা শান্তিতে নোবেল পুরুস্কার পাওয়ার সম্ভাব্য তালিকায় নেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম। আগামী শুক্রবার এ বছর শান্তিতে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করবে নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট। তখনই জানা যাবে- শেষ হাসি কার মুখে!

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড্যান স্মিথ বলেন, ‘এ বছর কে নোবেল পাবেন, এ ব্যাপারে আমি দীর্ঘকাল পর সবচেয়ে কম নিশ্চিত। আমার ধারণা, পুরস্কারটির মাধ্যমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিশেষ বার্তা প্রকাশ করতে চায় তারা (নোবেল কমিটি)। সবচেয়ে বড় কথা, আশাবাদের বার্তা এবং সবকিছু ঠিক বা আরও ভালো হবে- এমন বিশ্বাসের প্রচার ঘটানোর চেষ্টা তাদের থাকে।’

বরাবরের মতোই সম্ভাব্য বিজয়ীদের নাম নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি ব্যাপক গোপনীয়তার সঙ্গে আড়ালে রেখেছে। জানা গেছে, এবার নোবেল প্রত্যাশীর সংখ্যা ৩১৮, যার মধ্যে ব্যক্তি ২১১ ও প্রতিষ্ঠান ১০৭।

‘কোভিড শান্তি’ পুরস্কার?

ব্যতিক্রমধর্মী অস্থির এ বছরে শান্তিতে নোবেল পাওয়ার তালিকায় অনেকেই এগিয়ে রাখছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউিএইচও)। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামলানোয় ১০ মাস ধরে কাজ করছে সংস্থাটি। অন্যদিকে, পদ্ধতিগত বর্ণবাদ ও পুলিশি নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলা ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনকে সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ।

আলা সালাহ

বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, এ বছর সুদানের বিদ্রোহ গুরুত্ব পাবে। ওই বিদ্রোহে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যূত করা হয়। বিদ্রোহটিতে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন ‘ফোর্সেস ফর ফ্রিডম অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ (এফএফসি)’ এবং তরুণ আন্দোলনকর্মী আলা সালাহকে নোবেল জয়ে সম্ভাব্য হিসেবে গণ্য করছেন পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অসলোর পরিচালক হেনরিক উরডাল গণ্য করছেন।

সংঘাতকে উন্নয়নে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে সুদানের ঘটনাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা তার। তিনি বলেন, ‘আমার আশঙ্কা, নতুন বেসামরিক সরকার তুলনামূলক দুর্বল। তাই ওখানকার পরিস্থিতি যথেষ্ট ভঙুর।’

আলেক্সেই নাভালনি

অন্যদিকে, রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা এবং আগস্টে মারাত্মক বিষক্রিয়ার শিকার হওয়া আলেক্সেই নাভালনিকেও সম্ভাব্য জয়ী ভাবা হচ্ছে। উরডাল বলেন, ‘বিষ প্রয়োগের শিকার হওয়ার আগে থেকেই নাভালনি আমাদের তালিকায় রয়েছেন। রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে তাকে পুরস্কারটির জন্য বিবেচনা করা হতে পারে।’

এদিকে, স্মিথের বিশ্বাস, এ বছর সম্ভবত কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে পুরস্কৃত করা হবে। সে ক্ষেত্রে ‘জাতিসংঘ’র সম্ভাবনাও তিনি উড়িয়ে দিতে নারাজ।

গ্রেটা থুনবার্গ

সুইডিশ কিশোরী পরিবেশবাদী আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে গত বছরই পুরস্কারটির সম্ভাব্য জয়ী হিসেবে ভাবা হয়েছিল। তবে পরিবেশবাদী কারও ‘শান্তি’তে নোবেল পাওয়া উচিত কি না, এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কও কম নয়।

উরডাল অবশ্য বলেছেন, থুনবার্গকে নোবেল পেতে দেখলে তিনি বরং অবাক হবেন। তিনি বলেন, ‘পরিবেশকে সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম হিসেবে গণ্য করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে কোনো সংযোগ বিদ্যমান কি না- এ ব্যাপারে আমার প্রশ্ন রয়েছে।’

অন্যদিকে স্মিথ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সংযোগ থাকার গুরুত্ব নিয়ে যাদের সন্দেহ, আমি তাদের দলের নই। আমার ধারণা, জলবায়ু পরিবর্তন ও নিরাপত্তার মধ্যে সংযোগের প্রমাণ পরিষ্কার।’

জাসিন্ডা আরডার্ন

সম্ভাব্য নোবেলজয়ী হিসেবে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নের নাম আগেও আলোচনা হয়েছে। তার দেশ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যথেষ্ট সাফল্য দেখানোয় সেই সম্ভাবনা এবার আরও জোড়ালো হয়েছে। তবে বড় বড় আন্তর্জাতিক চুক্তি মধ্যস্থতায় তার সম্পৃক্ততার ঘাটতি এ ক্ষেত্রে এ ক্যাটাগরিতে নোবেলজয়ী বেশির ভাগ রাজনৈতিক নেতা থেকে তাকে পিছিয়ে রেখেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প

উরডাল বলেন, ‘মনোনয়ন পাওয়া আর পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হওয়া এক জিনিস নয়। তার মতে, ‘যে কেউই মনোনয়ন পেতে পারেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টমাত্রই মনোনয়ন পাওয়া নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা।’ ট্রাম্পের ব্যাপারে স্মিথ বলেন, ‘নিশ্চিত করে বলতে পারি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো সম্ভাবনা নেই।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com