যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর বাকি মাত্র ১৩ দিন। এরপরই ফয়সালা হয়ে যাবে হোয়াইট হাউজের চাবি উঠবে কার হাতে। এখনই এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা না গেলেও দেশজুড়ে জনমত জরিপে বেশ ভালভাবে এগিয়ে আছেন ডেমোক্রেট দল থেকে প্রার্থী জো বাইডেন। তবে সুইংস্টেটগুলোতে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার ব্যবধান খুবই অল্প। ওদিকে সামনেই বৃহস্পতিবার এবারকার সর্বশেষ প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক। সেই বিতর্ক নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন দুই প্রার্থীই। রিপাবলিকান দল থেকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিতর্ক আয়োজকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, শেষ বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতির ইস্যু থেকে বেরিয়ে এসে আয়োজকরা ডেমোক্রেট প্রার্থীকে সহায়তা করছে।
তিনি বলেছেন, করোনা ভাইরাস মহামারিতে কি ব্যবস্থা নিয়েছেন সে বিষয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এ অবস্থায় সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্যাম্প থেকে কমিশন অন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটস’কে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। তাতে দুই প্রার্থীর মধ্যে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় বিতর্কের বিষয় নির্ধারণের আহ্বান জানানো হয়েছে। ওই চিঠিতে ট্রাম্পের প্রচারণা বিষয়ক ম্যানেজার বিল স্টেপিয়েন বলেছেন, তৃতীয় বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতিতে ফোকাস করার বিষয়ে তাদের ক্যাম্পেইন থেকে এরই মধ্যে সম্মতি দেয়া হয়েছে। বিতর্কের মডারেটর এবং এনবিসি নিউজের প্রতিনিধি ক্রিস্টেন ওয়েলকার গত সপ্তাহে বিতর্কের টপিকস বা বিষয়বস্তু ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে আমেরিকান পরিবার, আমেরিকায় বর্ণবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন, জাতীয় নিরাপত্তা ও নেতৃত্ব।
সোমবার অ্যারিজোনার প্রেসকটে বিকেলে নির্বাচনী র্যালিতে অংশ নিয়েছেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি মিসেস ওয়েলকারকে একজন ‘র্যাডিক্যাল ডেমোক্রেট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং বিতর্কে ওয়েলকার ভাল করবেন না বলে পূর্বাভাষ দিয়েছেন। অন্যদিকে জো বাইডেন তার নিজস্ব পররাষ্ট্র বিষয়ক রেকর্ডের কারণে এই নীতিতে বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্টেপিয়েন। তিনি আরো বলেছেন, বিতর্ক বিষয়ক কমিশন জো বাইডেনকে তার নিজের কাহিনী থেকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছে। তিনি কমিশনকে জো বাইডেনপন্থি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, পুরো বিতর্ক একটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। তারা উদ্দেশ্যমুলক অবস্থান নিয়েছে। ফলে জনগণ কেন তাদের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, তা নিয়ে বিস্ময়ের কিছু নেই। ওদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন। সে সময়ে তার ছেলে হান্টার বাইডেনের ইউক্রেনের একটি ‘স্বার্থসংশ্লিষ্ট’ বিষয়ে ইমেইলের ব্যাপারে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বাইডেন।
জবাবে ডেমোক্রেট শিবির থেকে ট্রাম্পকে ঘায়েল করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ট্রাম্প প্রকৃতপক্ষে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ডেমোক্রেটদের জাতীয় পর্যায়ের প্রেস সেক্রেটারি টিজে ডাকলো বলেছেন, প্রচারণা শিবিরগুলো এবং ডিবেট বিষয়ক কমিশন কয়েক মাস আগে একমত হয়েছে যে, বিতর্কে মডারেট বা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যিনি উপডিস্থত থাকবেন, কি নিয়ে বিতর্ক হবে তা তিনিই নির্ধারণ করবেন। কিন্তু এখন ট্রাম্প শিবির মিথ্যা কথা বলছে। কারণ, ডনাল্ড ট্রাম্প এখন এই ভেবে ভীত যে, তাকে কোভিড-১৯ মোকাবিলা নিয়ে আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
ওদিকে প্রথম বিতর্কের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। বিশেষ করে এবারের প্রথম বিতর্কে জো বাইডেনের কথার মধ্যে হঠাৎ হঠাৎ বিঘ্ন সৃষ্টি করার জন্য ট্রাম্প খুবই সমালোচিত হচ্ছেন। ফলে বিতর্ক আয়োজকরা নতুন নিয়ম গ্রহণ করেছেন তৃতীয় ও চূড়ান্ত বিতর্কে। এর অধীনে মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেয়া হবে। ৯০ মিনিটের এই বিতর্ক কোনো বিজ্ঞাপন বিরতি ছাড়াই প্রচার হবে। একে ১৫ মিনিটের করে ৬টি অংশে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি পর্বে দু’জন প্রার্থীই দু’মিনিট নিরবচ্ছিন্ন সময় পাবেন। এ সময় যিনি বক্তব্য রাখবেন, তখন তার প্রতিপক্ষের মাইক্রোফোন বন্ধ রাখা হবে। এ ছাড়া বাকি সময় হবে মুক্ত বিতর্ক। এ সময়ে মাইক্রোফোন বন্ধ রাখা হবে না।