যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হয় ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী এই পদ্ধতিতেই একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন যা কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের আইনের জটিল এক সমন্বয়ের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতি রাখা হয়েছে ভোটার তথা জনগণের ওপর অনাস্থা থেকে। মানুষ চাইলেও যাতে নিজেদের পদ্ধতির বাইরে কাউকে ক্ষমতায় বসাতে না পারে এ জন্যই দেশটির স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়করা এ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। তখন এর নাম ‘মিনি-কংগ্রেস’ থাকলেও পরে এটি ইলেক্টোরাল কলেজ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
তাত্ত্বিকভাবে বলা যায়: প্রার্থীদের মধ্যে সারা দেশে যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান ইলেক্টোরাল কলেজ তাকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন করে থাকে।
ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতির কারণে মোট ৫৩৮ জন ইলেক্টোরাল কলেজ প্রতিনিধি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে থাকেন। ৫৩৮টির মধ্যে ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এ কারণে জনগণের ভোটে জয়ী হলেও হেরে যেতে হতে পারে একজন প্রার্থীকে। ২০১৬ সালেই জনগণের ভোটে জয়ী হয়েও হেরে যান ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন।
হিলারি বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ৩০ লাখের মতো বেশি ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু ইলেক্টোরাল কলেজ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকেই বেছে নেয়। এটাই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে জনগণের ভোটে জয়ী না হয়েও প্রেসিডেন্ট হওয়ার পদ্ধতি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন প্রার্থীরা সারা দেশে ভোটারদের কাছ থেকে যেসব ভোট পান সেগুলোকে বলা হয় পপুলার ভোট এবং ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটকে বলা হয় ইলেক্টোরাল ভোট। কোনো একটি রাজ্যে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি পপুলার ভোট পাবেন তিনি ওই রাজ্যের সবগুলো ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে যাবেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, টেক্সাস রাজ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী যদি ৫০.১% ভোট পান, তাহলে ওই রাজ্যের ৩৮টি ইলেকটোরাল ভোট তাদের পকেটেই যাবে। ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮।
মাইন ও নেব্রাসকা এই দুটো অঙ্গরাজ্য বাদে বাকি সবগুলো রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোট যোগ দিলে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ভোট পাবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। মোট ইলেক্টোরাল ভোট ৫৩৮ এর অর্ধেক ২৬৯ এবং জয়ী হয়ে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার জন্যে আরও একটি ভোট লাগবে। এভাবেই ২৭০টি ভোট পেতে হবে একজন প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য।