নিউইয়র্ক সিটিতে ২০ হাজারের অধিক বাংলাদেশীসহ ৯৬ হাজার ট্যাক্সি ড্রাইভারের অর্জিত অর্থের বড় একটি অংশ চুরির অভিযোগে উবারের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে ফেডারেল কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ৬ নভেম্বর ম্যানহাটানে ফেডারেল কোর্টে এই মামলা দায়ের করেছে ‘নিউইয়র্ক ট্যাক্সি ওয়ার্কার্স এলায়েন্স’।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, উবার ড্রাইভারের অর্জিত মোট অর্থ থেকে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে ট্যাক্স কর্তনের পাশাপাশি ব্ল্যাক কার ফান্ড সারচার্জ এবং তাদের সার্ভিস ফি কেটে নিয়েছে ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। এরফলে দিনভর ট্যাক্সি চালিয়ে যাত্রীভাড়া বাবদ ১০০ ডলার আয় হলে, তার বড় একটি অংশ উবারের একাউন্টে চলে যায়। সেই ড্রাইভারের ভাগ্যে জোটে বড়জোর ৪০ ডলার। শুধু তাই নয়, ড্রাইভারের সাথে উবারের প্রতারণার বড় একটি অভিযোগ রয়েছে যে, বৃষ্টি অথবা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কিংবা বিশেষ কোন কারণে যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে গেলেই উবারের সিস্টেমে ভাড়া বাড়ানো হয়, যার হিস্যা পান না ড্রাইভাররা। ড্রাইভারের সাথে স্বাভাবিক যে চুক্তি রয়েছে সে অনুযায়ী প্রদান করা হয়। এ বিষয়টি অবশ্য দায়েরকৃত মামলায় এখনও অন্তরভুক্ত করা হয়নি বলে জানা গেছে।
কঠোর পরিশ্রমী ড্রাইভারের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে টাক্স এবং সারচার্জ কেটে নেয়ার ঘটনায় ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে উবার কমপক্ষে ৮৬ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে বলে মামলা দায়েরকারি ট্যাক্সি ওয়ার্কার্স এলায়েন্সের কর্মকর্তা টিপু সুলতান এনআরবি নিউজকে জানান। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ভৈরবী দেশাই উবারের ছলচাতুরির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ট্যাক্সি ড্রাইভাররা দিনশেষে খালি পকেটে বাসায় ফিরলেও উবারের মালিক বিলিয়ন ডলারের মুনাফা গড়েন বছর শেষে। আর এভাবেই অভিবাসী সমাজের সদস্য ট্যাক্সি ড্রাইভারের সাথে প্রতারণায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে উবার কর্তৃপক্ষ। ড্রাইভারের অর্জিত অর্থ চুরির এমন ঘটনাকে বরদাশত করা যায় না বলেই আমরা আদালতে যেতে বাধ্য হলাম।
প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, উবার প্রতারণার ঘটনাগুলোকে পরিসংখ্যাণগত ভুল হিসেবে মেনে নিয়ে ২০১৭ বেশ ক’জন ড্রাইভারের অর্থ ফেরৎ দিয়েছে। তারা নাকি ভুলে অধিক অর্থ কেটে রেখেছিল। তবে মোট কতজনের কাছে থেকে কত মিলিয়ন ডলার কথিত সেই ভুলে কেটে রাখা হয়েছিল, তা বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করেনি কিংবা মোট কতজনকে সেই ডলার ফিরিয়ে দিয়েছে তাও জানা যায়নি। যদিও ভুলের সেই ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত রয়েছে বলেই মামলার উদ্ভব হলো।