মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৬ অপরাহ্ন

মাস্কে আগ্রহ নেই মানুষের!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০
  • ১৯০ বার

গতকাল শনিবার বেলা ৩টা থেকে ৩টা ৫ মিনিট। এই পাঁচ মিনিটে ইত্তেফাক মোড়ের দক্ষিণ পাশের ফুটপাথ দিয়ে যাতায়াত করেছেন ৫৩ জন মানুষ। যার মধ্যে ২৫ জনের কোনো মাস্ক ছিল না। বাকি ২৮ জনের মাস্ক ছিল। কিন্তু এর মধ্যে আবার ১৫ জনের মাস্ক দেখা গেছে থুতনির নিচে ঝুলছে! অবশিষ্ট ১৩ জনের মুখে ঠিকঠাক মাস্ক লক্ষ করা গেছে।

বেলা ৩টা ১০ থেকে ৩টা ১৫ পর্যন্ত সাতটি বাস ইত্তেফাক মোড় অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে একটি বাসের হেলপারের মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি। গোপীবাগ রেলগেট থেকে টিকাটুলি মোড় পর্যন্ত যে দোকানগুলো রয়েছে এর একজন দোকানদারের মুখেও গতকাল মাস্ক দেখা যায়নি। এই হচ্ছে রাজধানীর স্বাস্থ্যবিধি! মোবাইল কোর্ট, জেল-জরিমানা এসবের প্রতিও এই মানুষগুলোর কোনো তোয়াক্কা নেই।

হঠাৎ করেই গত কয়েক দিন ধরে দেশের করোনা পরিস্থিতি আবারো অবনতির দিকে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য মানুষকে আবারো জোর তাগিদ দেয়া হচ্ছে। এমনকি; স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সেসব ক্ষেত্রে কঠোর হওয়ারও নির্দেশনা রয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল-জরিমানা আদায়ের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু সরকারের এই নির্দেশনার প্রতি তোয়াক্কা নেই এক শ্রেণীর মানুষের। তারা কোনো কথাই কানে তুলছে না। এমনকি, রাস্তাঘাটে পর্যন্ত তারা মাস্ক পরছেন না।

রাজধানীর পল্টন এলাকার ব্যবসায়ী মোশাররফ জানান, তার দোকানে ১০ জন লোক এলে দেখা যায় পাঁচ-ছয় জনের মুখে কোনো মাস্ক নেই। তাদের বললেও মাস্ক পরেন না। উল্টো নানা বিতর্ক করেন। তাই এখন আর কাউকে কিছু বলেন না। বললেই ঝগড়া লাগে। তিনি বলেন, সরকার নির্দেশনা দিলেও সেই নির্দেশনা কেউ মানছে না। আর এই নির্দেশনা তদারকিরও কোনো ব্যবস্থা নেই। মোশাররফ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হলে আরো অনেক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা দরকার।

গতকাল মতিঝিল এলাকায় দুই বাস হেলপারকে মাস্ক না পরার কারণ জিজ্ঞাস করা হলে তাদের জবাব, ‘আমাদের কিছু হবে না। মাস্ক পরে লাভ কী?’ গতকাল আরো একাধিক পথচারী এই একই কথা বলেন। ‘তাদের কিছুই হবে না, বা ভাগ্যে থাকলে করোনা হবে। মাস্ক পরে লাভ কী?’ আবার কোনো কোনো মানুষ আছেন যাদের মাস্ক আছে কিন্তু থুতনির নিচে মাস্ক ঝুলছে। তাদের কয়েকজনকে মাস্ক ঠিকঠাক না পরার কারণ জিজ্ঞেস করতেই থুতনি থেকে মাস্ক টেনে মুখের ওপর দেন।

টিকাটুলির বাসিন্দা পথচারী শামিম গতকাল বলেন, কেউ কোনো নিয়মই মানতে চায় না। মানুষ দেখছে আবারো করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে; আবারো ঘরে ঘরে কান্না শুরু হয়েছে; তারপরও কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। শামিম বলেন, রাস্তায় নামলে আতঙ্কে থাকতে হয়। মানুষ হুমড়ি খেয়ে গায়ের ওপর পড়ে। প্রকাশ্যে হাঁচি-কাশি দেয়। কেউ কোনো নিয়মের মধ্যে নেই। দোকানে গেলে মানুষ যেন গায়ের ওপর উঠে যায়। গণপরিবহনে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী বহন করা হয়। কারো কোনো মাথাব্যথা নেই।

মতিঝিল শাপলা চত্বরের ফুটপাথের ব্যবসায়ী খায়রুল গতকাল বলেন, বাধ্য হয়ে দোকান খুলে বসেন। বেচা বিক্রিও করতে হয়। মানুষের সাথে কথা বলতে হয়। তবে মানুষ সচেতন নয়। তিনি বলেন, ফুটপাথে দোকান হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ তার দোকানের সামনে দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। সরকারের নির্দেশ মানছেন না। এমনকি মাস্ক পর্যন্ত পরছেন না।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com