চীনে উইঘুরদের উপর অত্যাচার চলছে। সেই প্রতিবাদে এবার চীনা মোবাইল সংস্থা হুয়ায়েইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি ফুটবলার আন্তোনিও গ্রিজম্যান। চীনের উইঘুর প্রদেশে উইঘুর সম্প্রদায়ের উপর নজরদারি চালাচ্ছে চীনের সরকার। সেই জন্য ফেস রেকগনিশন নামের সফ্টওয়্যারও বানিয়েছে তারা। আর এতে অভিযোগের তির হুয়ায়েই সংস্থার দিকেই।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ফেস রিকগনিশন, আইরিশ স্ক্যানার, ডিএনএ কালেকশন এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে উইঘুর সম্প্রদায় যাতে জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত না থাকতে পারে, তা নিশ্চিত করা যাবে। এর আগে উইঘুর প্রদেশে ট্রেনিং ক্যাম্প করে বন্দি রাখা হচ্ছিল মুসলিম সম্প্রদায়কে। সেই বিষয় প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে মুখ পুরেছে শি জিনপিং সরকারের। তারপর উইঘুরদের দমন করতে প্রযুক্তির ব্যবহার বিশ্বের সর্বত্র নিন্দা কুড়িয়েছে।
সেই জন্যই গ্রিজম্যান রীতিমত প্রেস বিবৃতিতে জানিয়ে দেন, ‘হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে এমন সন্দেহের বাতাবরণ দৃঢ় হওয়ার পর তাদের সঙ্গে অবিলম্বে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি হুয়াওয়েকে আহ্বান জানিয়ে বলছি যে, শুধু জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করলেই আমি খুশি হচ্ছি না। বরং এই গণ নিপীড়নের নিন্দা জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে সমাজের পুরুষ ও নারীদের অধিকার অক্ষুণ্ন রাখতে একে ব্যবহার করতে হবে।’
ফ্রান্সের সোনালী যুগের অন্যতম সেরা ফুটবলার তিনি। ২০১৬ সালে ইউরো জেতার পর বিশ্বকাপ জেতেন ২০১৮-য়। বর্তমানে মেসির বার্সেলোনাতেই খেলেন তিনি। ২০১৭ সাল থেকেই হুয়ায়েইয়ের ব্র্যান্ড আম্বাসাডর গ্রিজম্যান। ফ্রান্স সহ ইউরোপে চীনা এই টেলিকম জায়ান্টের প্রচারের অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি।
যাই হোক, ফরাসি বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার এর আগে একাধিক সামাজিক ইস্যুতে মুখ খুলেছেন। কিছুদিন আগেই ফরাসি এক মিউজিক প্রোডিউসারকে নিগ্রহের বিরুদ্ধে পুলিশের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তিনি। তারপরেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো ঘোষণা করেন, পুলিশ বিভাগে সংশোধন প্রয়োজন। তারও আগে গ্যালারি থেকে সমকামিতা সংক্রান্ত গালাগালি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
গ্রিজম্যানের প্রচারের হাত ধরেই ইউরোপে হুয়ায়েইয়ের ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠছিল। এখন গ্রিজম্যান সরাসরি মুখ খোলায় চীনা সরকার ও সেই সঙ্গে টেলিকম সংস্থা বেশ চাপে যে পড়ল, তাতে সন্দেহ নেই। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস