নন্দিত কথাসাহিত্যিক কলম জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের আজ ৭১তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। টিভিতেও প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। গতকাল রাত ১২টা ১ মিনিটে হুমায়ূন আহমেদের বাসা দখিন হাওয়ায় কেক কাটেন
পরিবারের সদস্যরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরাও আজ লেখকের প্রিয় নুহাশ পল্লীতে ভিড় জমাবে। তাদের জন্যও সেখানে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল রাতেই হুমায়ূনের কবর আর নুহাশ পল্লীতে মোমবাতি জ্বালানো হয়। আজ সকালে ছেলে নিষাদ ও নিনিতকে নিয়ে স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন কবর জিয়ারত করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে ‘হুমায়ূন মেলা’। আজ বেলা ১১টায় হিমুপ্রেমীরা উপস্থিত থেকে হলুদ বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করবেন। উপস্থিত থাকবেন হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্যসহ বিভিন্ন অঙ্গনে তার ভক্তরা। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনরা লেখকের স্মরণে স্মৃতিকথা বলবেন। পাশাপাশি নৃত্য পরিবেশন করবেন চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে ও অন্য নৃত্যশিল্পীরা। মেলার স্টলগুলোতে থাকবে হুমায়ূন আহমেদের বই, তার নির্মিত চলচ্চিত্র ও নাটকের ভিডিও সিডি। মেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল আই ও রেডিও ভূমি।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান। তবে বাংলা সাহিত্যের এ বরপুত্র অছেন এবং থাকবেন তার ধ্রুপদী সাহিত্যের মাধ্যমে।
১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের পর পরই হুমায়ূন আহমেদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। উপন্যাসে ও নাটকে তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো বিশেষ করে ‘হিমু’, ‘মিসির আলী’, ‘শুভ্র’ তরুণ-তরুণীদের কাছে হয়ে ওঠে অনুকরণীয়। নব্বই দশকের মাঝামাঝি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে লেখালেখিতে পুরোপুরি মনোযোগ দেন।
তার লেখা উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে-নন্দিত নরকে, লীলাবতী, কবি, শঙ্খনীল কারাগার, গৌরিপুর জংশন, বহুব্রীহি, এইসব দিনরাত্রি, দারুচিনি দ্বীপ, নক্ষত্রের রাত, কোথাও কেউ নেই, আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের দিন, জোছনা ও জননীর গল্প প্রভৃতি। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলোও দর্শকনন্দিত-আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা এবং নয় নম্বর বিপদ সংকেত। তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ও জয় করেছে দর্শক ও সমালোচকদের মন।
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘একুশে পদক’ লাভ করেন হুমায়ূন আহমেদ। এ ছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন। দেশের বাইরেও তাকে নিয়ে ১৫ মিনিটের তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছে ‘হু ইজ হু ইন এশিয়া’।
Like!! Great article post.Really thank you! Really Cool.