শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩৫৭ বার

সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি সুস্থ গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে অসুস্থ ধারার অনুপ্রবেশ ঘটেছে অনেক আগেই। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে রাজনীতি কলুষিত হয়েছে তৎকালীন সরকারগুলোর দ্বারা। রাজনীতিকে রাজনীতির মতো করে চলতে দেওয়া হয়নি। বরং রাজনীতির ছত্রচ্ছায়ায় অশুভ শক্তি দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতার পর দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে নতুন করে ফিরিয়ে আনা হয়। একাত্তরের পরাজিত শক্তি ধর্মের আবরণে নতুন করে দেশের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা শুরু করে। সে বিষয়টি উল্লেখ করেই বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ দেশে ‘ধর্মের নামে কোনো বিভেদ’ সৃষ্টি করতে তিনি দেবেন না। একটি চিহ্নিত মৌলবাদী গোষ্ঠী যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের বিরোধিতা এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরিতে তৎপর, ঠিক তখনই তাঁর এই স্পষ্ট ভাষণ এলো। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেছেন, ‘এ দেশে ধর্মের নামে কোনো ধরনের বিভেদ-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে আমরা দেব না। ধর্মীয় মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে এ দেশের মানুষ প্রগতি, অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবেন।’

মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—সবারই যার যার ধর্ম পালনের অধিকার সাংবিধানিকভাবে এ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আছে। ১৯৭১ সালে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষই স্বাধীনতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। আমাদের সংবিধানে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র—এই চারটি বিষয়কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ। আজ এমন একসময়ে মৌলবাদী সংগঠনগুলো নতুন করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, যখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে উদাহরণ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলা করছে জাতি। দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মা সেতু। বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির যে প্রসার তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। আবার এটাও সত্য, এসব দল ও সংগঠনের প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন একেবারেই কম। নির্বাচনী হিসাবে সব ইসলামপন্থী দল মিলে যে ভোট পায় তা প্রমাণ করে, বাংলাদেশের মানুষ এখনো ধর্মকে ‘রাজনৈতিক আদর্শ’ হিসেবে বিবেচনা করে না। তবে বিশ্লেষণের দাবি রাখে বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক দল বা ইসলামপন্থীদের উত্থান ও শক্তি সঞ্চয়ের বিষয়টি। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি কোন পথে বাংলাদেশে ঢুকে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে কাদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে প্রসারিত হয়েছে, তা কারো অজানা নয়। তাদের অর্থনৈতিক শক্তির নেপথ্যে কারা, সে বিষয়টিও সবার জানা। তাদের মূলোৎপাটন করে সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রসারে মনোযোগী হতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com