ব্রেক্সিট বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান সমন্বয়ক মিশেল বার্ণিয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বক্তব্য প্রদানকালে বাণিজ্য ও সুরক্ষা বিষয়ে উভয় পক্ষের সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনার কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। মিশেল বার্ণিয়ার অবশ্য বলেছেন, চুক্তির পথটি খুব সরু হলেও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেনের আলাপের পর ব্রাসেলসে দুই দলের প্রতিনিধিদের মধ্যে শুক্রবার আবারো আলোচনা শুরু হয়েছে। মি. বার্ণিয়ার এবং তার যুক্তরাজ্যের প্রতিপক্ষ লর্ড ডেভিড ফ্রস্টের মধ্যে ব্রাসেলসে যে আলোচনা হচ্ছে, তার লক্ষ্য হল অমীমাংসিত বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা দূর করা। এরমধ্যে রয়েছে ১লা জানুয়ারি থেকে বৃটেনের জল সীমায় ফিশিং অধিকার এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তথা যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীরা যাতে অন্যায্য সুবিধা না পায়।
মাছ ধরার বিষয়ে মি. বার্ণিয়ার বলছিলেন, ইউকে যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের জেলেদের অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের জলের ওপর নিজেদের সার্বভৌমত্ব ব্যবহার করতে চায়, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া তথা সিঙ্গল মার্কেট অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণের অধিকার রাখতে হবে। ব্রাসেল মূলত যুক্তরাজ্যে তাদের মাছের মজুদে পুরো নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার জন্য দশ বছরে পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছিল, পরে তা আট বছরে নেমে এসেছে। তবে বৃটিশ আলোচকরা তিন বছরের পরামর্শ দিয়েছেন।
বরিস জনসন ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্যের অচলাবস্থা ভাঙ্গার জন্য বৃটিশ ফিশিং এরিয়ায় প্রবেশের বিষয়ে চূড়ান্ত প্রস্তাব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ঐক্যমতের ক্ষেত্রে অনেক ফাঁক রয়েছে, যা পূরণ করতে হবে। বিষয়টি অনেক কঠিন।
তবে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে আমরা আলোচনা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক।
মিসেস ভন ডার লেন বলছিলেন, বিশেষত ফিশিং রাইটস সম্পর্কিত বড় পার্থক্য দূর করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হবে। যদিও মি. জনসন বলেছেন, ইইউর অবস্থান উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত না হলে কোনও চুক্তির সম্ভবনা কম। এর আগে, মি. বার্নিয়ার ইইউ দেশসমূহের ফিশিং মন্ত্রীদের সাথে ইস্যু নিয়ে চলমান বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা স্যার কায়ার স্টারমার প্রধানমন্ত্রীকে চুক্তিটি সম্পন্ন করে বৃটিশ জনগণকে তা অবহিত করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য ৩১শে জানুয়ারী ইইউ ত্যাগ করবে। তবে উভয় পক্ষের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা চলছে। ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে উভয় পক্ষ একমত না হলে তারা ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউটিও) বিধি মোতাবেক বাণিজ্য পরিচালনা করবে। এতে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে শুল্ক প্রবর্তন হতে পারে এবং এ কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।