শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ অপরাহ্ন

দশ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা আসছে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২০৭ বার

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস নিয়ে অজানা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল পৃথিবীজুড়ে। সারা পৃথিবীর মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। বিশ্ব অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় মানুষের জীবন ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় মোট ২১টি প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

এর সঙ্গে আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে ১ লাখ ২১ কোটি টাকা। এতে অর্থনীতি তার পথে এগিয়ে যেতে থাকে। বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে। দ্বিতীয় ঢেউ এবং নতুন করোনার অভিঘাত মোকাবিলায় নতুন কর্মকৌশল ঠিক করতে ইতোমধ্যে ৩ পর্বের সিরিজ সংলাপ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থনীতি সচল রাখতে সংশ্লিষ্টদের সুপারিশের আলোকে নতুন আরেকটি প্রণোদনা প্যাকেজ দিতে যাচ্ছে সরকার। খবর অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রের।

সূত্র জানায়, নতুন প্যাকেজে সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ সুদ ধার্য করা হচ্ছে। এ প্যাকেজের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। দেশের কুটির, ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) প্রণোদনা ঋণ প্রদানে প্যাকেজটি তৈরি করা হচ্ছে। নতুন নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তহবিল ঘোষণা করা হবে। এ খাতে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণ পাওয়ার যোগ্য হতে পারেন।

জানা গেছে, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে শুধু চলতি মূলধন খাতে এ প্রণোদনা ঋণ দেওয়া হবে। এ ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার হবে বছরে ১৪ শতাংশ। তবে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণগ্রহীতাদের জন্য ৯ শতাংশ সুদ প্রযোজ্য হবে। অবশিষ্ট ৫ শতাংশ সুদ ভর্তুকি হিসেবে দেবে সরকার। তহবিলের মেয়াদ পাঁচ বছর। তবে সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে এক বছর পর্যন্ত। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ সংক্রান্ত এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রস্তাবিত নীতিমালায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক দশমিক ৫ শতাংশ সুদে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থায়ন করবে। অন্যদিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ২ দশমিক ৫ শতাংশ সুদে এমএফআইগুলোকে অর্থায়ন করবে। এমএফআই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বিদ্যমান ঋণ স্থিতির সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রণোদনা ঋণ তহবিলের আওতায় ঋণ নিতে পারবে। একটি ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ তিনটি ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারবে। তবে মোট গৃহীত ঋণ নির্ধারিত ঋণসীমার মধ্যে থাকতে হবে।

গৃহীত ঋণের ন্যূনতম মেয়াদ হবে দুই বছর। ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক পর্যায়ে তাদের মোট প্রদেয় ঋণের ৪৫ শতাংশ ট্রেডিং খাতে এবং ৫৫ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে বিতরণ করতে পারবে। বিতরণ করা ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতে ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে গ্রাহক পর্যায়ে নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে। তবে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রাহক নির্বাচন, ঋণ বিতরণসংশ্লিষ্ট ব্যয়, গ্রেস পিরিয়ড, ঋণের কিস্তি, ঋণ আদায়, ঋণ শ্রেণিকরণ ও মনিটরিং ইত্যাদি বিষয় ‘এমআরএ’ ও ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হবে।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, অর্থনীতির চাকা সচল রাখার ক্ষেত্রে বড়দের কাছে সহায়তা পৌঁছানো সহজ। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে পেঁৗঁছতে পারছি না। এ জন্য সামাজিক সুরক্ষা খাতে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারিদের জন্য বাজেট থেকে এককালীন সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির বলেন, জুন-জুলাই মাসে আমরা দেখেছিলাম দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে গতি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এর পর করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ আসার পর নভেম্বর থেকে আমাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য নতুন প্রণোদনা প্রয়োজন। কারণ কিছু খাত এখনো সচল হয়ে ওঠেনি। তবে আশার কথা হলো, সরকার এসব ব্যাপারে তীক্ষè দৃষ্টি রাখছে। পাশাপাশি সময় অনুযায়ী দরকারি সাহসী সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধা করছে না। আমরা এখনো অনুকূল পরিবেশে পৌঁছতে পারিনি। এই যে অনুকূল পরিবেশটা চাচ্ছি এ জন্য সরকারকে নীতি ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজীকরণ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে শ্রম অনুযায়ী শ্রমিকদের জন্য যথেষ্ট সহযোগিতা দিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com