বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন

সীমান্তে ফেলানী হত্যা : ৯ বছরেও বিচার পায়নি পরিবার

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২১
  • ১৫০ বার

বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার নয় বছরেও বিচার পায়নি তার পরিবার।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে অনন্তপুর সীমান্তে নির্মম হত্যার শিকার হয় ফেলানী।

দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা কাঁটা তারে ঝুলে থাকে তার লাশ। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলে বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত। পরে বিএসএফ এর বিশেষ আদালতে দুই দফায় বিচারিক রায়ে খালাস পান অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ।

পরে এ রায়কে প্রত্যাখ্যান করে ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন মাসুমের সহযোগিতায় ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করে ফেলানীর পরিবার।

এরপর কয়েক দফা ফেলানী হত্যার বিচার কার্য অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিচার কার্য অমীমাংসিত থাকায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফেলানীর বাবা ও মা।

২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফেলানী হত্যার বিচার পুনরায় শুরুর পর ১৭ নভেম্বর আবারো আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত পুনরায় আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়।

রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই আবারো সংগঠন ‘মাসুম’ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন করে। ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। পরের দুই বছর কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি।

এরপর ২০১৯ ও ২০২০ সালে কয়েকবার শুনানির তারিখ ধার্য হলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্পন্ন হয়নি।

এদিকে মেয়ে হত্যার বিচার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফেলানীর বাবা ও মা।

বুধবার ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার মেয়ে ফেলানী হত্যার বিচার চেয়ে অনেক ঘুরেছি, মানবাধিকার সংস্থাসহ বহুজনের কাছে গিয়েছি। কোনো ফল পাইনি। মেয়ে আমার চলে যাওয়ার প্রায় ১০ বছর হতে যাচ্ছে। আজও তার বিচার পেলাম না। বার বার বিচারের তারিখ বদলায়। তাহলে বিচার পাবো কীভাবে।’

২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনার পূর্বে শুনানির তারিখ থাকলেও তা হয়নি। এখন আর কোনো খোঁজ খবর জানি না, বলেন তিনি।

ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, ‘ফেলানী হত্যার এত বছর হয়ে গেছে আজও বিচার পেলাম না। আমি দুই দেশের সরকারের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছি।’

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যেমন রয়েছে তেমনি বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতও এর সুষ্ঠু বিচার আশা করে। ফেলানী হত্যার বিচার প্রথমে ভারতই শুরু করে। কিন্তু বিএসএফ সঠিক সিদ্ধান্ত না দেয়ায় সুপ্রিম কোর্টে বিচারটি গড়ায়। ফলে সেখান থেকেই রায়টি আসবে।’

তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের কয়েক দফা শুনানির তারিখ পিছিয়ে গেছে। বর্তমান কোভিড-১৯ এর জন্য সেখানে ভার্চুয়াল কোর্ট চলছে। যদি ভার্চুয়ালিও বিচারের শুনানি হয় তাহলে দ্রুত এর নিষ্পত্তি হতে পারে। অন্যথায় পরিস্থিতি ভালো হলে রিটটির শুনানি হবে। আশা করছি ফেলানীর পরিবার ন্যায় বিচার পাবে।’

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের নুরুল ইসলাম নুরু পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতের দিল্লিতে। মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে ফুলবাড়ী অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের ওপর মই বেয়ে আসার সময় বিএসএফ এর গুলিতে মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে ফেলানীর।

সূত্র : ইউএনবি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com