বৃটেনে শুক্রবার একদিনে করোনা ভাইরাসে কমপক্ষে ১৩২৫ জন মারা গেছেন। একে একদিনে সেখানে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড বলা হচ্ছে। এদিন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮,০৫৩ জন। ওদিকে সরকার কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। এর ফলে বন্ধ রয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অনেকের ঘরে জমিয়ে রাখা খাবার শেষের দিকে। বেরও হতে পারছেন না ঘর থেকে। ফোনে আত্মীয়ের খবর নেয়া ছাড়া কারো সাথে কারো মুখ দেখাদেখি নেই।
এমন অবস্থায় ইংল্যান্ডের লোকজনকে করোনায় আক্রান্তদের মতো আচরণ করতে আহ্বান জানিয়েছে সরকার। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ক্রমশ বৃদ্ধি মোকাবিলায় সরকারি বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। সরকারি সূত্র বলেছেন, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে আইনে যতটুকু ব্যাখ্যা দেয়া আছে তার চেয়ে আরো কঠোর হতে হবে পুলিশকে। একটি সূত্র বলেছেন, শুক্রবার বৃটেনে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা যাওয়ার ফলে এটা খুব বেশি জরুরি যে প্রতিজনকে আইন মানতে হবে। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, বৃটেনে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকার সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিজ্ঞাপন বাড়িয়েছে । তা শেয়ার করা হচ্ছে টেলিভিশন, রেডিও, খবরের কাগজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একটি বিজ্ঞাপনে ইংল্যান্ডের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা প্রফেসর ক্রিস হুইটি বলেছেন, ভবিষ্যতের জন্য করোনার টিকা সুস্পষ্ট আশা জাগিয়েছে। কিন্তু এখন থেকে আমাদেরকে অবশ্যই সবাইকে ঘরে অবস্থা করতে হবে। রক্ষা করতে হবে জাতীয় স্বাস্থ্যখাতকে। বাঁচাতে হবে জীবন।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, করোনা মহামরি শুরুর পর যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক চাপে রয়েছে হাসপাতালগুলো। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। এর ফলে জাতীয় স্বাস্থ্যখাতে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ওদিকে পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, লন্ডনে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের হার ছাড়িয়ে গেছে এক হাজার। জাতীয় পরিসংখ্যান বিষয়ক অফিসের সাম্প্রতিক তথ্যে বলা হয়েছে, লন্ডনে অবস্থানকারীদের প্রতি ৩০ জনের মধ্যে একজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মেয়র সাদেক খান করোনা ভাইরাসের বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে ঘোষণা করেছেন। শুক্রবার এমন ঘোষণা দিয়ে তিনি লন্ডনের সংক্রমণকে ‘বড় এক ইনসিডেন্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। লন্ডনের স্থানীয় পরিষদ সব উপাসনালয় বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। লন্ডনের বিশপ সারাজহ মুল্লালি বলেছেন, চার্চগুলোর উচিত পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনা করা।