শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন

খেলাপি ঋণে শিথিলতা চান না ব্যাংকাররাও

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২১
  • ১৯১ বার

খেলাপি ঋণের শিথিলতা চান না ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরাও। এক বছর ধরে ঋণ আদায়ের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শিথিলতা প্রত্যাহার চেয়েছেন তারা। এমনি পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত ও ব্যাংকারদের চাহিদা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্রুত এ বিষয়ে একটি নীতিমালা দেবে।

গতকাল বুধবার ব্যাংকারদের সাথে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঋণ বিতরণের কর্মসূচির আওতায় ছোট গ্রাহকদের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকারদের নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর ফজলে কবির। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতি তিন মাস অন্তর ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সাথে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির। গতকাল অনলাইনে ব্যাংকারদের সাথে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গভর্নর।

বৈঠক সূত্র জানা গেছে, বৈঠকের প্রথমেই গভর্নর প্রণোদনা প্যাকেজ বিশেষ করে ছোট গ্রাহকদের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। গত বছরের এপ্রিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রেয়াতি সুদে গ্রাহকদের মাছে ঋণ বিতরণের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর মধ্যে কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে ঋণ বিতরণের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা এবং সেবা ও বৃহৎ শিল্প খাতে প্রথমে ৩০ হাজার কোটি টাকা, পরে তা বাড়িয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলো বড় গ্রাহকদের ঋণ বিতরণ করলেও ছোট গ্রাহকদের তেমন ঋণ বিতরণ করছে না। ঋণ বিতরণের নীতিমালা দেয়ার প্রায় ১০ মাস অতিবাহিত হতে চললেও বড় গ্রাহকদের মধ্যে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৯০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে; কিন্তু ছোট গ্রাহকদের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকও বাস্তবায়ন হয়নি। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে দিলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন নির্দেশনা তেমন আমলে নেয়নি ব্যাংকগুলো। গতকাল ব্যাংকার্স সভায় এ বিষয়ে গভর্নর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি দ্রুত ছোট গ্রাহকদের মধ্যে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন ব্যাংকারদের।

এ দিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে খেলাপি ঋণের ওপর শিথিলতা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধ না করলেও তা খেলাপি করা যাবে না। এ নির্দেশনা প্রথমে জুন, পরে দুই দফা বাড়িয়ে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছিল। এর ফলে প্রায় এক বছর ঋণ আদায় কার্যত বন্ধ ছিল। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখনো শেষ হয়নি। তাই ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা এ নির্দেশনা আরো কয়েক মাস বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন; কিন্তু গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় তা নাকচ করে দেয়া হয়। গতকাল ব্যাংকার্স বৈঠকে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরাও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ শিথিলতা বর্ধিত না করার অনুরোধ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঋণখেলাপির ওপর শিথিলতা আর বর্ধিত না করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকারদের আশ্বস্ত করেছেন।

এ বিষয়ে দ্রুতই এক সার্কুলার জারির মাধ্যমে তা ব্যাংকারদের জানিয়ে দেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। একই সাথে ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায় কার্যক্রম আরো জোরদার করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ দিকে অনেক ব্যাংক স্বীকৃত আমদানি দায় পরিশোধ করছে না বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অভিযোগ এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে গতকাল ব্যাংকার্স সভায় বলা হয়েছে, দ্রুত স্বীকৃত আমদানি দায় পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে থাকা ব্যাংকগুলোর হিসাব থেকে তা সমন্বয় করে নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com