যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন বিচার শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে তার পুরো আইনজীবী প্যানেল সরে দাঁড়িয়েছে। আইনি কৌশল নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট এই প্যানেল সরে দাঁড়িয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এই প্যানেল সংবিধানের আলোকে অভিশংসন ঠেকাতে ট্রাম্পের হয়ে লড়ার পরিকল্পনা করেছিল। খবর এবিসি নিউজের।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মূলত মামলার কৌশল নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার আইনজীবীদের মতবিরোধ দেখা দেয়। ট্রাম্পের দাবি ছিল, ৩ নভেম্বরের নির্বাচন জালিয়াতি হয়েছে এই যুক্তি দেখিয়ে আইনজীবীরা সিনেটে তার হয়ে লড়বেন। কিন্তু আইনজীবী প্যানেলের ফোকাস ছিল সংবিধানের ভেতরে থেকে ট্রাম্পের পক্ষে লড়া। যেহেতু ট্রাম্প আর প্রেসিডেন্ট-ই নন, তাই এ মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চেয়েছিলেন আইনজীবীরা। এতে সায় দেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনজীবীদের সরে যাওয়াকে ট্রাম্প শিবির দুপক্ষের পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন।
ট্রাম্পের সাবেক প্রচারণা উপদেষ্টা জেইসন মিলার সিএনএনকে বলেছেন, ইতিমধ্যে দায়িত্ব থেকে বিদায় নেওয়া একজন প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করার ডেমোক্র্যাট উদ্যোগ পুরোপুরি অসাংবিধানিক ও দেশের জন্য অত্যন্ত খারাপ। ঘটনা হচ্ছে ইতিমধ্যে ৪৫ সিনেটর ভোট দিয়ে জানিয়েছেন এটি অসাংবিধানিক। আমরা অনেক কাজ গুছিয়ে রেখেছি, কিন্তু আমাদের আইনি টিমের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, অল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় অভিশংসন বিচারে তার হয়ে লড়তে ইচ্ছুক আইনজীবী খুঁজে পেতে ট্রাম্পকে যখন গলদ্ঘর্ম হতে হচ্ছে, তখন এ ঘটনায় (৫ আইনজীবীর সরে দাঁড়ানো) নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন আগামী সপ্তাহে আইনি শুনানি ও কয়েক দিনের মধ্যে বিচার শুরু হওয়ার আগে, নির্বাচন জালিয়াতির অভিযোগে অনড় থাকা ট্রাম্প হঠাৎ করে নিজেকে আইনি প্রতিনিধিত্বহীন অবস্থায় দেখতে পাচ্ছেন।
ট্রাম্পের আইনজীবী প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন সাউথ ক্যারোলিনার আইনজীবী বুচ বুয়ের্স। ডেবরাহ বারবিয়ার, জশ হাওয়ার্ডও প্যানেল নেতার সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন।
১৪ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের সশস্ত্র হামলায় পাঁচজন নিহত হন। এ হামলায় উসকানিদাতা হিসেবে ট্রাম্পকে দায়ী করা হয়েছে। এ কারণে ১৩ জানুয়ারি তাকে মার্কিন কংগ্রেসে অভিশংসন করা হয়। এর আগেও ট্রাম্পকে একবার অভিশংসন করা হয়েছিল।