সিরিয়ার ফার্স্ট লেডি আসমা আল-আসাদ দেশটির গৃহযুদ্ধে সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডে উস্কানি ও উৎসাহ দেয়ার অভিযোগে ব্রিটেনে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার পাশাপাশি তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব হারাতে পারেন। ইতোমধ্যেই অভিযোগের ভিত্তিতে দেশটিতে সিরিয়ার ফার্স্ট লেডির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত দশ বছরে সিরিয়ার সেনারা হাসপাতাল, স্কুলসহ বিভিন্ন বেসামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যারেল, রাসায়নিক অস্ত্র, বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।
ব্রিটেনভিত্তিক সংবাদপত্র দ্যা টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনভিত্তিক এক আন্তর্জাতিক ল চেম্বার সিরিয়ার শাসন কাঠামোতে ফার্স্ট লেডির ক্ষমতা ও সিরীয় সশস্ত্র বাহিনীকে তার মৌখিক সমর্থনের বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ দিলে ব্রিটেনের মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসমা আল-আসাদ ওই সকল স্বৈরশাসকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন, ব্রিটেনে যারা বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন।
ল চেম্বার গুয়ের্নিকা ৩৭-এর প্রধান টবি ক্যাডম্যান বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন আসমা আল-আসাদের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য তার বিরুদ্ধে আনা মামলা খুবই শক্তিশালী।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের গুয়ের্নিকা ৩৭-এর আইনি দল এই ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে কয়েক মাস ধরে তদন্ত চালাচ্ছে। এর ফলে তারা যুক্তরাজ্যের মেট্রোপলিটন পুলিশের ‘সন্ত্রাস বিরোধী দলের সাথে দু’বার বিভিন্ন প্রমাণাদি নিয়ে যোগাযোগ করেন। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের দশ বছর বার্ষিকীর মধ্যেই কার্যকর একটি প্রক্রিয়া চলছে, যা দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার মুখোমুখির নিশ্চয়তা দিতে পারে।’
তদন্তে যুক্তি দেখানো হয়েছে, সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে প্রকাশ্যে সমর্থন দেয়ার কারণে আসমা আল-আসাদ অপরাধী।
এখনো স্পষ্ট নয় যে, সিরিয়ার ফার্স্ট লেডির অনুপস্থিতিতে মামলা পরিচালিত হবে কিনা। তবে ব্রিটেনের আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সিরিয়ার ফার্স্ট লেডি শুনানিতে হাজির থাকবেন না বলে মনে করা হচ্ছে।
আসমা আল-আসাদের শুনানির ভিত্তিতে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি হতে পারে। এর ফলে সিরিয়ার বাইরে গ্রেফতার হওয়ার শঙ্কা ছাড়া তিনি ভ্রমণ করতে পারবেন না।
তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে, আসমা আল-আসাদের মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে যাবে এবং তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ব্রিটেনের মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে, ব্রিটেনের মেট্রোপলিটন পুলিশের যুদ্ধাপরাধ ইউনিট চলমান সিরিয়া সঙ্ঘাত নিয়ে ২০২০ সালের জুলাইয়ে একটি সুপারিশ পেয়েছে। যুদ্ধাপরাধ ইউনিটের অফিসাররা এ সুপারিশটি মূল্যায়নের
বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।’
সূত্র : আরব নিউজ