দেশে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নেতা-কর্মীদের জনসমাগম ঘটে এরকম ‘রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক’ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ওই বৈঠকে পরে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের উদাসীনতায় করোনার পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে জনগণ, দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিবেচনায় বিএনপির রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হলো।
মোবাইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়া, সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য আহবানও জানানো হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। গত ২৪ মার্চ বিএনপি করোনার ব্যাপক বিস্তারে দলের স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তীর সব অনুষ্ঠানও ৩০ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জানানো হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে মোদি বিরোধী হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশের উদ্ভুত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে বিএনপি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘হেফাজতের কর্মসূচির পর সারা দেশে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চলছে বলে দলের কাছে তথ্য আছে। বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেও বিভিন্ন জেলায় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীকে গ্রেপ্তার ষড়যন্ত্র ও ফাঁস হওয়া অডিও বানানো বলে মনে করে বিএনপি। এসব ঘটনার নিন্দা জানানো হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির অপর এক নেতা জানান, বিএনপি মোদির সফরের বিরুদ্ধে কোনো কর্মসূচি দেয়নি এবং হেফাজতের কর্মসূচিতেও কোনো সমর্থন দেয়নি। শুধুমাত্র স্বাধীনতা দিবসে জনগণের ওপর পুলিশের গুলি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হামলায় হতাহতের ঘটনার প্রতিবাদে কর্মসূচি দিয়েছে। বিএনপির সেই কর্মসূচিতে কেন হামলা করা হচ্ছে তা নিয়ে পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সূত্র জনায়, সভায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়াও করোনা সংক্রমণের কথা বিবেচনা করে আবারও দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করা যায় কিনা সে বিষয়ে মতামত দেন নেতারা।