চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে প্রতিশোধ নিলো পিএসজি। সাত মাস আগেই দলটির বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেও হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয় নেইমার-এমবাপেদের। এবার সেই দলের বিপক্ষে আলো ছড়ালেন দু’জনই, তাতেই কাঙ্খিত জয়ে সেমিফাইনালে এক পা বাড়ালো গত আসরের রানার্স আপরা।
বুধবার রাতে বায়ার্নের ঘরের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় প্রথম লেগের রোমাঞ্চকর ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতেছে পিএসজি। দলের হয়ে জোড়া গোল করেন কিলিয়ান এমবাপে। এ ছাড়া আরও একটি গোল আসে ব্রাজিলান ডিফেন্ডার মারকুইনহোসের পা থেকে। গোল না পেলেও দুই গোলে অবদান রাখেন নেইমার। বায়ার্নের হয়ে একটি করে গোল করেছেন এরিক ম্যাক্সিম চৌপো-মোটিং ও থমাস মুলার।
চ্যাম্পিয়নদের মাঠে শুরুটা দুর্দান্ত হয় পিএসজির। তৃতীয় মিনিটের মাথা দুর্দান্ত গোল করে দলকে লিড এনে দেন এমবাপে। ডি মারিয়ার বাড়ানো বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন নেইমার। সেখান থেকে আলতো ছোঁয়ায় বল বাড়ান এমবাপেকে। বল পেয়েই দারুণ শটে ম্যানুয়েল ন্যয়ারের পায়ের ভেতর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড।
২৭তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মারকুইনহোস। মাঝ মাঠের কাছ থেকে নেইমারের বাড়ানো উঁচু ক্রস দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ নেন তিনি। বল পেয়ে কালক্ষেপণ না করেই দ্রুততার সঙ্গে গোলমুখে শট নেন তিনি। ন্যয়ার বুঝে উঠার আগেই বল জালে জড়ালে গোল উদযাপনে মেতে উঠে পিএসজি। এ সময় পায়ে চোট লেগে মাঠ ছাড়েন মারকুইনহোস।
ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দলের সেরা তারকা ফরোয়ার্ড রবের্ত লেভানদোভস্কির দলে না থাকার শূন্যতা ঠিকই টের পেয়েছেন কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। বল দখলে এগিয়ে থাকলে ভালো ফিনিশিং করতে পারছিলো না বাভারিয়ানরা।
৩৭তম মিনিটে এসে কাঙ্খিত গোলের দেখা পায় বায়ার্ন। পিএসজির আনমার্কে থাকা এরিক ম্যাক্সিম হেড কেইলর নাভাসকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ালে ব্যবধান কমায় বায়ার্ন। বিরতির আগে আর কোনো গোল না হওয়ায় এক গোলে পিছিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে স্বাগতিকরা।
বিরতির পর গোছালো ফুটবল খেলতে থাকে বায়ার্ন। পিএসজিকে কোনোভাবেই বল দখলে রাখতে দেয়নি তারা। কিছুটা উপরে উঠে এসে বার বার আক্রমণের চেষ্টা করে তারা। ৬০তম মিনিটে মুলারের গোলে সমতায় ফিরে বায়ার্ন। ডান পাশ থেকে জশুয়া খিমিচের নেওয়া ফ্রি-কিক দারুণ হেডে জালে জড়ান জার্মান এই মিডফিল্ডার।
আট মিনিট পরই আবারো লিড নেয় পিএসজি। এবারও দলের ত্রাতা হয়ে লিড এনে দেন বার্সেলোনার মাঠে হ্যাটট্রিক করা এমবাপে। পায়ের নিখুঁত ফিনিশারে কেভিন প্রিন্স বোয়েটাংকে বোকা বানিয়ে বল জালে জড়ান চলমান আসরের আট ম্যাচে আট গোল করা এই তারকা ফরোয়ার্ড।
শেষের দিকে পিএসজি রক্ষণাত্মক হয়ে উঠে। বেশ কয়েকবার খেলোয়াড় পরিবর্তন করেন পিএসজি কোচ মারিও পেচেত্তিনো। তাতে কি, বায়ার্ন যথেষ্ট আক্রমণ করেছে। কিন্তু এতে ম্যাচের ফল আর পরিবর্তন হয়নি। পুরো ম্যাচে ৩৬ শতাংশ বল দখলে রাখা পিএসজি ৩-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। আগামী ১৪ এপ্রিল ফিরতি লেগ খেলতে ফ্রান্সে যাবে বাভারিয়ানরা।