করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অনেকটাই ভালো বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা। ১৩ তম দিনে পার হলেও তার শরীরে জ্বর নেই। শ্বাস-প্রশ্বাসের স্যাচুরেশন স্বাভাবিক রয়েছে। তার খাবারের রুচি আগের মতো আছে বলে জানিয়েছেন তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘অন্য দিনের চেয়ে তিনি ভালো বোধ করছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। এই অবস্থায় তার যে চিকিৎসাটা চলছে, সেটাই চলবে। ১৪তম দিন পার হলে মেডিকেল বোর্ডের আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে, সেগুলো করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের রুটিন চেকআপের পর এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, বুধবার দুপুর পর্যন্ত ম্যাডামের জন্য একটা ক্রুশিয়াল টাইম। কারণ, তার করোনা আক্রান্তের ১৪তম দিন শুরু হবে। গত প্রায় ২৪ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে তার শরীরে কোনো জ্বর আসেনি। তার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে। অক্সিজেন স্যাচুরেশন খুবই ভালো আছে। খাবার রুচি আগের মতই আছে। কাশি, গলাব্যথা কখনোই ছিল না, সেটি এখনও নেই। এ অবস্থায় উনার চিকিৎসা যা চলছে সেটাই চলবে। বুধবার পার হওয়ার পর আবার মেডিকেল বোর্ড বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ছেলে তারেক রহমান সার্বক্ষণিক মা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার খোঁজ-খবর রাখছেন জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন ডা. জোবাইদা রহমান। খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলেও জানান ডা. জাহিদ।
খালেদা জিয়া করোনার টিকা নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা নেগেটিভ আসার পর চার সপ্তাহ হওয়ার আগ পর্যন্ত টিকা নেওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ। তার আরও কিছু রোগ আছে। সে বিষয় মাথায় রেখে এখন আমরা যে ক্লোজ অবজারভেশন করছি, সেটা অব্যাহত রাখতে হবে। এই পুরো মাসটা তার স্বাস্থ্যের দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। কারণ আপনারা জানেন অনেক রোগীর দুই-তিন সপ্তাহেও নেগেটিভ রিপোর্ট আসে না। অনেক ক্ষেত্রে করোনা নেগেটিভ হতে চার সপ্তাহও লাগে। কাজেই করোনার গতি প্রকৃতি কোন দিকে যায়, প্রত্যেকটা জিনিস আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। কখনও আমাদের ঢিলেমি করলে চলবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডা. আল মামুন এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া ইউংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান।
উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল খালেদা জিয়া করোনা আক্রান্ত হন। গত ১৫ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান করা হয়। সিটি স্ক্যান শেষে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, সিটি স্ক্যান রিপোর্ট অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার শরীরে করোনার সংক্রমণ খুবই সামান্য। যে কারণে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। এরপর থেকে চিকিৎসকরা তার বাসায় গিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন।