চল্লিশজন বিশ্বনেতাকে সাথে নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে একটি শীর্ষ জলবায়ু সম্মেলন শুরু করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে নিজেদের বৈশ্বিক নেতৃত্ব পুনরায় জোরদার করার লক্ষ্যে এই ভার্চুয়াল সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন বাইডেন। হোয়াইট হাউস থেকে এই ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এই সম্মেলনে নিজেদের হালনাগাদ কার্বন প্রতিশ্রুতি বা লক্ষ্যমাত্রা প্রকাশ করবে। এই লক্ষ্যমাত্রা বা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কার্বন নিঃসরণ বা নির্গমন প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনবে।
এদিকে বৈঠকের আগে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জলবায়ুবিষয়ক ক্ষেত্রগুলোতে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর প্রতি আরও উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। অস্ট্রেলিয়ার উদাহরণ টেনে এক কর্মকর্তা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে তাদের গৃহীত উদ্যোগে ‘পরিবর্তন আনতে হবে’।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন।
জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনই প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে পুনরায় যোগদানের ঘোষণা দেন। এর পাশাপাশি বাইডেন এও বলেছিলেন যে, তিনি ধরিত্রী দিবসে (আজ ২২ এপ্রিল) একটি বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রায় ৪০ জন বিশ্বনেতার সঙ্গে বসবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক ভার্চুয়াল সম্মেলনে যোগ দেবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বৃহস্পতিবার দুদিনের এই সম্মেলন শুরু হচ্ছে। বিশ্বের বেশ কয়েকজন নেতাকে সম্মেলনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাইডেন। শি জিনপিংও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা নেয়ার পর এটিই হতে যাচ্ছে চীনের প্রেসিডেন্টের সাথে তার প্রথম বৈঠক।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, শি জিনপিং ভিডিও কলের মাধ্যমে সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বক্তব্য দেবেন।
অর্থনৈতিক নানা বিষয়, দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তার এবং চীনের নানা মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কের অনেকটা অবনতি হয়েছে। তবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একমত হতে পেরেছে। শক্তিশালী অর্থনীতির দুই দেশ হওয়ার পাশাপাশি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণকারী দেশও বটে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশবিষয়ক দূত জন কেরি সাংহাই সফরে যান এবং চীনের পরিবেশবিষয়ক দূতের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর এটিই ছিল দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রথম বৈঠক। বৈঠকে উভয় দেশ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমিয়ে আনতে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে একমত হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্বে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে একজোট হয়ে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছিলেন বিশ্বনেতারা। পরে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। বাইডেন ক্ষমতায় এসে দেশটিকে আবার চুক্তিতে ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
সূত্র : বিবিসি