ভারতে ভয়াবহ আকার ধারণ করার পর বাংলাদেশেও শনাক্ত হয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা কালো ছত্রাক। এখনো পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গবেষকরা বলছেন, সাধারণত করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মাঝেই দেখা গেছে এই ছত্রাকের উপস্থিতি।দেশে এখন পর্যন্ত দুজন রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে এ ফাঙ্গাসে আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কতটা ভয়ংকর হলে ছত্রাকটির সংক্রমণে রোগীর মৃত্যু হতে পারে, আসুন জেনে নেওয়া যাক।
ভারতের মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালের প্রখ্যাত চক্ষুবিশেষজ্ঞ ডাক্তার অ্যখশে নায়ার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, মিউকোর নামক এক ধরনের ছত্রাকের সংস্পর্শে এই সংক্রমণ হয়। এই ছত্রাকে সংক্রমিত হলে মৃত্যুর আশংকা ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া সংক্রমিতদের অধিকাংশেরই চোখ অপসারণ করতে হয়। কিছুক্ষেত্রে সংক্রমণ মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যা আক্রান্তদের মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে।
তিনি জানান, এই ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসকেও আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিস, ক্যানসার বা এইচআইভি/এইডস যাদের আছে, কিংবা কোনো রোগের কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম এই মিউকোর থেকে তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
করোনাভাইরাসের জীবাণুর সাথে লড়াই করতে গিয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে যেসব ক্ষতি হয় সেই ক্ষতি থামানোর জন্যও ডাক্তাররা কোভিডের চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহার করেন। আর তা থেকেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বিস্তার লাভ করে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন গবেষকরা।
উপসর্গ
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমিত রোগীদের সাধারণত যেসব উপসর্গ দেখা দেয় তার মধ্যে রয়েছে : নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং নাক থেকে রক্ত পড়া, চোখে ব্যথা এবং চোখ ফুলে যাওয়া, চোখের পাতা ঝুলে পড়া, চোখে ঝাপসা দেখা, যার থেকে পরে দৃষ্টিশক্তি চলে যায়, এবং নাকের চামড়ার চারপাশে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেওয়া।
প্রতিরোধ
চিকিৎসকরা বলছেন, কোভিড-১৯ এর রোগীর চিকিৎসার সময় এবং তার সুস্থ হয়ে ওঠার সময় যদি নিশ্চিত করা যায় তাকে সঠিক পরিমাণ স্টেরয়েড দেওয়া হচ্ছে কিনা তবেই এ ছত্রাক সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব। এ জন্য রোগী সুস্থ হওয়ার পর বা হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর তার রক্তে শর্করার মাত্রা চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখা জরুরি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।