রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আরও একটু উন্নতির দিকে। তার ফুসফুসে জমে থাকা পানি অপসারণে দুটি পাইপ লাগানো হয়েছিল। এর মধ্যে একটি আগেই খুলে ফেলা হয়েছিল। অবশিষ্ট যে পাইপটি ছিল, সেটিও খুলে ফেলা হয়েছে গত রবিবার রাতে।
ফিজিওথেরাপির অংশ হিসেবে অন্যের সাহায্য নিয়ে এখন প্রতিদিনই রুটিনমাফিক সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে একটু একটু করে হাঁটাচলা করানো হয়। তবে করোনাপরবর্তী সময়ে তার কিডনিতে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল, সে বিষয়ে এখনো শঙ্কামুক্ত হওয়া যায়নি। হার্টবিট বেড়ে যাওয়ার কারণে তাকে আরও কিছুদিন সিসিইউতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা। গতকাল বুধবার খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের এক সদস্য এসব তথ্য জানান।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গুলশানের বাসা ফিরোজায় ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। পরে তাদেরই পরামর্শে ২৭ এপ্রিল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩ মে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা বিএনপির শীর্ষনেত্রীকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন।
পরে করোনা পরীক্ষায় তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তবে করোনার পর খালেদা জিয়ার পুরনো রোগ আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসের পাশাপাশি হার্ট ও কিডনিসংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে।
খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে মেডিক্যাল বোর্ডের এক চিকিৎসক জানান, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে খুবই ধীরে। তার ফুসফুসে জমা পানি বের করার জন্য বুকের দুপাশে স্থাপন করা দুটি পাইপের মধ্যে বাম পাশেরটা গত ১৯ মে খুলে ফেলা হয়। আর গত রবিবার রাতে খুলে ফেলা হয় দ্বিতীয় পাইপটিও। এখন তার ফুসফুসের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, নিয়মানুযায়ী ফুসফুসে কতটুকু পানি আসে তার ওপর নির্ভর করছে পরে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে আশার কথা হচ্ছে- খালেদা জিয়ার ফুসফুস জটিলতা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। কিডনির জটিলতা এখনো কমেনি। ডায়াবেটিসের অবস্থা অনেকটা অনিয়ন্ত্রিত। তার হার্টবিট স্বাভাবিক না হওয়ায় আরও কিছুদিন সিসিইউতে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মেডিক্যাল বোর্ডেরই আরেক চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক সক্ষমতা আরও বাড়াতে ফিজিওথেরাপির অংশ হিসেবে প্রতিদিনই তাকে রুটিন করে হাঁটাচলা করানো হচ্ছে। গতকাল বুধবার অন্যের সাহায্য নিয়ে তাকে ৫০ গজের মতো হাঁটানো হয়।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটছে ধীরে ধীরে। নেত্রীর সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান।