শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৩ পূর্বাহ্ন

কানাডার পরিত্যক্ত স্কুলে ২১৫ শিশুর গণকবর

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩০ মে, ২০২১
  • ১২৬ বার

কানাডায় ১৯৭৮ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি পরিত্যক্ত আবাসিক স্কুলে শিশু শিক্ষার্থীদের গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখান থেকে ২১৫ শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধারের পর এ নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। গত শুক্রবার বিশ্ব গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর ফলাও করে প্রচারের পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক’ ও দেশের ইতিহাসের লজ্জাজনক অধ্যায় হিসেবে বর্ণনা করেছেন। খবর বিবিসি।

কানাডার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা কামলুপসে অবস্থিত আলোচিত স্কুলটির নাম ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কামলুপস ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল। আর যে শিশুদের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে তারা সবাই টিকেমলুপস টে

সেকওয়েপেমেক নৃগোষ্ঠীর সদস্য ছিল। গত বৃহস্পতিবার ওই গোষ্ঠীর প্রধান রোসান্নে ক্যাসিমির এই মর্মান্তিক খবরটি বিশ্বকে জানান। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের সম্প্রদায় এ ঘটনার কথা আগে থেকেই জানত; কিন্তু আমাদের হাতে কোনো প্রমাণ ছিল না- এখন শুধু আমরা প্রমাণ পেলাম। তিনি আরও বলেন, এই অপূরণীয় ক্ষতির বিষয়টি স্কুলের কোনো নথিতেই পাওয়া যাবে না। আর যাদের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে তিন বছরের শিশুও রয়েছে।

খবরে বলা হয়, দেহাবশেষগুলো রাডার বিশেষজ্ঞের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, উনিশ ও বিশ শতকের দিকে কানাডায় আবাসিক স্কুলে শিক্ষাগ্রহণ বাধ্যতামূলক ছিল। এই স্কুলগুলো অধিকাংশই সরকার ও ক্যাথলিক খ্রিস্টান কর্তৃপক্ষ দ্বারা পরিচালিত হতো। এ ধরনের স্কুলের মধ্যে কলম্বিয়ার কামলুপস ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল সবচেয়ে বড়। ১৮৯০ সালে স্কুলটি রোমান ক্যাথলিকরা শুরু করে। ১৯৫০ সালে যখন এটির রমরমা অবস্থা সেই সময় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল অন্তত ৫০০। এর পর ১৯৬৯ সালে এটির দেখভালের দায়িত্ব নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ১৯৭৮ সালে বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত স্থানীয় শিক্ষার্থীরা স্কুলটিতে পড়াশোনা করেছে।

ইতিহাস বলছে, অষ্টাদশ শতকের শেষ থেকে ঊনবিংশ শতকের শুরুর দিকে ইউরোপ থেকে দল দলে লোক কানাডায় যেতে থাকে। সেই সময় স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তাদের সংঘাত শুরু হয়। তখন ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা স্থানীয় আদিবাসীদের খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করতে এবং তাদের ‘সভ্য’ করার নামে কানাডাজুড়ে আবাসিক স্কুল চালু করে। ১৮৬৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দেড় লাখের বেশি আদিবাসী শিশুকে তাদের পরিবারের কাছ থেকে জোরপূর্বক নিয়ে এসব স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। এই স্কুলগুলোয় শিশুরা নিজের ভাষায় কথা বলার অনুমতি ছিল না। এই শিশু শিক্ষার্থীরা অনেকেই আর পরিবারের কাছে ফিরে যেত না। পরবর্তী সময়ে এসব স্কুলে শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের খবর জানা গেছে। শিশুদের ওপর শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০১৫ সালে এক প্রতিবেদনে ঐতিহাসিক সত্য বেরিয়ে আসে যে, এসব স্কুলে আসলে ‘সাংস্কৃতিক গণহত্যা চালানো’ হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com