সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১৮ অপরাহ্ন

সুপ্রিম কোর্ট বার ক্যান্টিনে গরুর মাংস রান্নার নির্দেশনা চেয়ে আবেদন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২ জুন, ২০২১
  • ১৬৯ বার

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে গরুর মাংস রান্না করায় একটি আইনজীবী সংগঠন প্রতিবাদ করেছিল। সেই প্রতিবাদের পর এবার গরুর মাংস নির্দেশনা চেয়ে পাল্টা আবেদন জানিয়েছেন আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান। আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক বরাবর আবেদন করেন ওই তিনি।

আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, গরুর মাংস বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বৈধ একটি খাবার। বাংলাদেশের কোনো আইনে এই গরুর মাংসকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর। যুক্তরাজ্যের এগ্রিকালচার অ্যান্ড হর্টিকালচার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন বি-৬, বি-১২, মিনারেল, জিংক রয়েছে এবং এটি প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। গরুর মাংসে পুষ্টিগুণ বিবেচনা করে এবং দেশের জনগণের প্রোটিন নিশ্চিতে সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ৪.২২ কোটি টাকা ব্যয়ে “আধুনিক পদ্ধতিতে গরু হৃষ্টপুষ্ট করণ” প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

আবেদনে আরও বলা হয়, ‘গরুর মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ায় ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বব্যাপী তা অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার। এছাড়া আমাদের পাশের দেশ ভারতের সব রাজ্যে গরু জবাই ও মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ নয়। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, গোয়া, কেরালা, তামিলনাড়ু, মিজোরাম, মেঘালয়, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গে গরু জবাই করা নিষিদ্ধ নয়। এছাড়া ২০১৭ সালে ভারত সরকার প্রাণির প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ আইনে (প্রিভেনশন অব কালচারাল টু অ্যানিমেলস অ্যাক্ট) গবাদি পশু জবাইয়ের উদ্দেশ্যে ক্রয়-বিক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে দেয়।

আবেদনে আইনজীবী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, কোনো খাবার খাওয়া বা না-খাওয়া মানুষের ব্যক্তিগত ইচ্ছা ও রুচির বিষয়। স্বাস্থ্যগত কারণে বা বিশ্বাসজনিত কারণে কেউ গরুর মাংস অপছন্দ বা নাও খেতে পারেন। তাই বলে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে ক্যান্টিনগুলোতে গরুর মাংস রান্না বা বিক্রি হবে না, এ বিষয়গুলো অত্যন্ত অমানবিক। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক পরিশ্রম করেন। তাই আইনজীবীদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিতে বার অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে সব ক্যান্টিনে গরুর মাংস রান্না ও বিক্রি হওয়া আবশ্যক। পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত কারণে বা বিশ্বাসজনিত কারণে যারা গরুর গোশত খেতে চান না, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা উচিত।’

উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে গরুর মাংস রান্নার ঘটনায় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সুপ্রিম কোর্ট শাখার নেতৃবৃন্দরা প্রতিবাদ জানান। একইসঙ্গে ক্যান্টিনে গরুর মাংস রান্না বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সমিতির বর্তমান কমিটির প্রতি আহবান জানান তারা। আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি বিভাস চন্দ্র বিশ্বাসসহ চার আইনজীবী ওই আবেদন করেন। আবেদনটিতে স্বাক্ষরকারী অন্য আইনজীবীরা হলেন- আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সম্পাদক অনুপ কুমার সাহা, আইনজীবী সমিতির বিজয়া পুনর্মিলনী ও বাণী অর্চনা পরিষদের আহবায়ক জয়া ভট্টাচার্য্য এবং সদস্য সচিব মিন্টু চন্দ্র দাস।

আবেদনে বলা হয়, আমরা নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পারলাম যে, গত ২৯ ও ৩০ মে রাতে সুপ্রিম কোর্ট বার ক্যান্টিনে গো মাংস রান্না করা হয়, রাতে তা খাবারের জন্য পরিবেশন করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ঐতিহ্যগতভাবেই এর সৃষ্টিলগ্ন হতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকায় কখনোই গো মাংস রান্না ও পরিবেশন করা হয় নাই। তাই সুপ্রিম কোর্ট ক্যান্টিনে গরুর মাংস রান্না বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চান তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com