অনেকগুলো রেকর্ড গড়ার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু হাঙ্গেরির জমাট রক্ষণে অপেক্ষা বাড়ার আশঙ্কা জেগেছিল রোনালদোর মনে। তবে তা আর বাড়তে দেননি তিনি। শেষের দিকে জোড়া গোল করে ফ্রান্স কিংবদন্তি মিশেল প্লাতিনিকে ছাড়িয়ে ইউরোর সর্বোচ্চ গোলদাতার খেতাব নিজের করে নিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে জার্মানির বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগারকে ছাড়িয়ে ইউরোপের খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার কীর্তিও গড়েন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই তারকা।
রোনালদোর রেকর্ডময় রাতে বুদাপেস্টের ৬৭ হাজার দর্শককে হতাশ করে দিয়ে ৩-০ গোলের জয় পেয়েছে পর্তুগাল। তবে জয় পেলেও হাঙ্গেরির রক্ষণ ভাঙতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে রোনালদো-ব্রুনো ফের্নান্দেসদের। তার উপর দর্শকদের একপেশী সাপোর্ট তো ছিলই বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে।
পুরো ম্যাচে পর্তুগালকে আটকে রাখতে সক্ষম হলেও শেষ আট মিনিটে আর তা ধরে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। এ সময়ে গুনে গুনে তিনবার হাঙ্গেরির জালে বল জড়ান রোনালদো ও রাফায়েল গুয়েরেইরো। যদিও এই ম্যাচ দিয়ে ইউরোতে পাঁচবার খেলার খেতাবও নিজের করে নেন রোনালদো।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রাণবন্ত লড়েছে পর্তুগাল। কিন্তু প্রতিপক্ষে জমাট রক্ষণের বাধায় গোলমুখ খুলতে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ৮৪ মিনিট পর্যন্ত। এরপর আর আসলে কিছুই করার ছিল না হাঙ্গেরির। একের পর এক গোলে জয় তুলে নেয় পর্তুগাল। পুরো ম্যাচে সাতবার গোলমুখ শট নেয় পর্তুগাল, আর পাল্টা তিনবার নেয় হাঙ্গেরি। তবে ফলটা যায় পর্তুগালেরই ভাগ্যে।
ম্যাচর শুরু থেকে সুযোগ মিসের মহড়ায় পড়ে পর্তুগাল। আবার রক্ষণ ভেদ করতেও ব্যর্থ হয় রোনালদোরা। বিরতির পরও একই চিত্র। ম্যাচের ফল ড্র নিয়ে যখন শঙ্কা ঠিক তখনই ৮৪তম মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন গুয়েরেইরো। তার গোলের পর আর রক্ষণ টেকেনি হাঙ্গেরির। পরের দুটো গোল করেন রোনালদো নিজেই। এতেই রেকর্ড গড়েন এই তারকা ফরোয়ার্ড।
৮৭তম মিনিটে রাফা সিলভাকে ডি-বক্সে ফাউল করলেই পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। সেখানে সফল স্পট-কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রোনালদো। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে রাফার সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে কাছ থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন ৩৬ বছর বয়সী তারকা। ইউরোর মূল পর্বে রোনালদোর গোল হলো ১১টি। দেশের হয়ে ১৭৫ ম্যাচে তার গোল ১০৬টি। আর ৩টি হলে ইরানের আলি দাইয়ের গড়া আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১০৯ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করবেন তিনি।
এই ইউরোর মৃত্যুকূপ হিসেবে পরিচিত ‘এফ’ গ্রুপে দারুণ শুরু হলো পর্তুগালের। আগামী ১৯ জুন পরের ম্যাচ খেলবে তারা জার্মানির বিপক্ষে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে তারা লড়বে গতবারের রানার্সআপ ফ্রান্সকে।