দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, লকডাউন নিয়ে বারবার প্রজ্ঞাপন ও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন সরকারের সেই অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশ।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় এসব কথা বলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এসময় করোনা মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতারও অভিযোগ তোলেন তিনি।
জাসদ সভাপতি বলেন, সরকারের ভেতরে তিনি অস্থিরতা লক্ষ্য করছেন। গত কয়েক দিনে লকডাউন-শাটডাউন নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি এবং তা ঘনঘন সংশোধন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অদলবদল, এ নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য-বিবৃতির মধ্য দিয়ে অস্থিরতাই প্রকাশ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপনে পরস্পরবিরোধী বক্তব্যও রয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে এটা বাঞ্ছনীয় নয়। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ নয়টি মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত। এতে নয়টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতাও লক্ষ্য করা গেছে বলেও জানান তিনি।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রসঙ্গ টেনে সাবেক মন্ত্রী ইনু বলেন, করোনায় মৃত্যু আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। শহরেই নয়, জেলা-উপজেলায়ও সংক্রমণ ঘটেছে। ঘরে ঘরে অনেক অসুস্থ। জেলা-উপজেলায় রোগীর জন্য বেড পাওয়া যায় না। অক্সিজেনের জন্য হাহাকার চলছে। সরকারও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন।
ইনু বলেন, করোনা মোকাবিলায় যেসব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছেন, তাদের গত নয় মাসে নির্ধারিত কোনো দৈনিক ভাতা দেওয়া হয়নি। তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। তাদের প্রণোদনা দেওয়া দরকার। চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি ভাতা ও প্রণোদনা দেওয়া উচিত।
জাসদ সভাপতি বলেন, সংক্রমণের বিস্তার রোধে লকডাউন ও শাটডাউনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে, দুতিন দিনের মধ্যে খাদ্যের জন্য সাধারণ মানুষের হাহাকার শুরু হয়। সংকট দেখা দেয়। সংক্রমিত ব্যক্তির জন্য বেড, অক্সিজেনের চাহিদা ও আইসিইউর জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়।
দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় জাসদ সভাপতি হাসনুল হক ইনু জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দ্রুত হাসপাতালের শয্যা বাড়ানো, হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা, অক্সিজেন সিলিন্ডার, পোর্টেবল অক্সিজেন জোগাড়েরও দাবি জানান।