চলতি সপ্তাহেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, “করোনার বিরুদ্ধে লড়াই প্রায় শেষ। তবে সতর্ক থাকতে হবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে”। প্রেসিডেন্টের কথাই সত্য করে প্রতিদিনই মার্কিন মুলুকে দাপট বাড়িয়ে চলেছে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট । ফলে ফের একবার উর্ধ্বমুখী হয়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি-র তরফে প্রকাশিত তথ্যে জানানো হয়েছে, সাতদিনে গড়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৯-এ, যা বিগত দুই সপ্তাহের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। ৪ জুলাই স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রচুর জনসমাগমকেই এই সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসাবে মনে করা হচ্ছে। আক্রান্তদের ৫২ শতাংশের শরীরে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট পাওয়া গেছে। গত এপ্রিল থেকে আমেরিকায় কমেছে টিকাকরণের হার।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের ৭০ শতাংশকে টিকা দেয়া হবে। বাস্তবে ৬৭ শতাংশকে টিকা দেয়া হয়েছে। বিশ্বে সর্বাধিক সংখ্যক করোনা ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে আমেরিকাতেই।
এদিকে আমেরিকার পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলেই টিকাকরণের হার তুলনামূলকভাবে কম। ওই সব অঞ্চলে করোনা সংক্রমণও বেশি হয়েছে। আলাস্কা এবং দক্ষিণ ক্যারোলিনাতে গত দুই সপ্তাহে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি সংক্রমণ বেড়েছে , আরকানসাসে সংক্রমণ বেড়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। মিসৌরিতে ১৪ দিনে ২০ শতাংশ সংক্রমণ বেড়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যথেষ্ট সংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। সেখানে অতিমহামারীর প্রকোপ তুলনায় কম। জন হপকিন্স সেন্টারের গবেষক অমেশ আদালজা বলেন, “ইজরায়েলে যেভাবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে ফের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, একইভাবে আমেরিকাতেও আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আমাদের আক্রান্তের সংখ্যার ওপর নজর না দিয়ে হাসপাতালে কত সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছেন, তার ওপর নজর দেয়া উচিত। কারণ ভ্যাকসিন নেয়ার পর সংক্রমণ হবে না, এই গ্যারান্টি না দেয়া হলেও হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা কমবে বলে দাবি করা হয়েছে। রোগী সংখ্যা দেখেই টিকার কার্যকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আরও ভালভাবে বোঝা যাবে।” আপাতত পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিডের বিরুদ্ধে যথেষ্ট কার্যকরী। মডার্নার টিকা সম্পর্কেও একথা বলা যায়। ইতিমধ্যে করোনা অতিমহামারীর উত্স সম্পর্কে জানার জন্য চীনের ওপরে চাপ বাড়াচ্ছে আমেরিকা। মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর (এফডিএ)-এর প্রাক্তন কমিশনার স্কট গটলিয়েব বলছেন, উহানের বায়োসেফটি ল্যাবরেটরি থেকে ভাইরাস লিক করেছিল এই সন্দেহটাই জোরদার হচ্ছে। কিন্তু চীন কিছুতেই এই বিষয়টা মেনে নিতে চাইছে না। পাল্টা দোষারোপ করছে।