মুস্তাফিজ-শরিফুলদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে স্বল্প রানে আটকে যায় অস্ট্রেলিয়া। ছোট লক্ষ্য পেয়েও মাঝে দিয়ে পরপর উইকেট খুইয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অজিদের হাতে। সেখান থেকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ম্যাচ বের করে আনেন তরুণ ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহান। তাদের প্রতিরোধী জুটিতে ভর করে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ এগিয়ে লাল-সবুজের বাংলাদেশ।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টসে জিতে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২১ তোলে অজিরা। জবাবে নির্ধারিত ওভারের ৮ বল বাকি থাকতেই পাঁচ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। সফরকারীদের বিপক্ষে এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছে টিম টাইগার্স।
লক্ষ্য ছোট, একটু দায়িত্বশীল ব্যাটিং করলেই জয় নিশ্চিত। কিন্তু এমন দিনেও ব্যর্থতার পরিচয় দেন ওপেনার সৌম্য সরকার। রানের খাতা খোলার আগেই তাকে বোল্ড করেন মিচেল স্টার্ক। আরেক ওপেনার নাঈম শেখের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হন। মাত্র ৯ রান করে হ্যাজলউডের শিকার হন তিনি।
তৃতীয় উইকেটের জুটিতে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৩৭ রানের জুটি গড়েন শেখ মেহেদী হাসান। দারুণ খেলতে থাকা সাকিবকে ফিরিয়ে সফরকারী শিবিরে স্বস্তি ফেরান অ্যান্ড্রু টাই। ১৭ বলে ২৬ করেন তিনি। পরের ওভারে নতুন ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহকে ফেরান অ্যাগার। বাইরের বল ব্যাটে করে টেনে স্ট্যাম্পে আনেন রিয়াদ, তাতেই শূন্য রানে ফেরেন তিনি।
দলের বিপদের সময় এগিয়ে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পড হন মেহেদী। অ্যাডাম জাম্পার করা বলটি কিছুটা এগিয়ে খেলতে যান তিনি। ব্যাটে বলে হয়নি, বলটি লুপে নিয়ে সরাসরি স্ট্যাম্প ভাঙেন উইকেটরক্ষক ওয়েড। ২৪ বলে ২৩ রান করে ফেরেন মেহেদী। দলের বিপর্যয়ে হাল ধরেন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও নুরুল হাসান সোহান। এই যুগলের ৫৬ রানের দায়িত্বশীল ব্যাটে পাঁচ উইকেট হাতে রেখে জয়ে পায় বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ৩৭ রানে অপরাজিত আফিফের সঙ্গে ২২ রানে অপরাজিত ইনিংস খেলেন সোহান।
এর আগে, ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন দুই অজি ওপেনার অ্যালেক্স ক্যারি ও জশ ফিলিপে। মাত্র ১১ রান করেই শেখ মেহেদীর শিকার হন ক্যারি। খানিক পরেই আরেক ওপেনার ফিলিপেকে (১০) ফেরান মুস্তাফিজ। ফিজের বলটি বুঝে উঠার আগেই স্ট্যাম্পে আঘাতহানলে ফেরেন ফিলিপে।
মাত্র ৩১ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া দলকে টেনে তোলেন মিচেল মার্শ ও মোয়াসেস হেনরিকস। তাদের ৫৭ রানের প্রতিরোধী জুটিতে ভেঙে স্বাগতিক শিবিরে স্বস্তির বাতাস বইয়ে দেন সাকিব আল হাসান। ২৫ বলে ৩০ করে ফেরেন হেনরিকস। গত ম্যাচে ৪৫ করা মার্শ আজও একই সংখ্যক রান করে ফেরেন। থিতু হওয়া এই ব্যাটসম্যানকে ভুল খেলতে বাধ্য করেন শরিফুল ইসলাম।
দলের প্রয়োজন মেটাতে ব্যর্থ হন ম্যাথু ওয়েড। ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে তাকে বোল্ড করেন মুস্তাফিজ। পরের বলে নতুন ব্যাটসম্যান অ্যাস্টন অ্যাগারকেও ফেরান এই পেসার। ফিজের স্লোয়ার বলে কিছুটা বাউন্স ছিল। খেলতে গিয়েও ভুল করে বসেন অ্যাগার। তাতেই বল ব্যাটে লেগে উইকেটের পেছনে থাকা সোহানের গ্লাভসে জমা হয়।
১৯তম ওভারে দ্বিতীয় বলেই অ্যাস্টন টার্নারকে ফেরান শরিফুল। এই পেসারের করা স্লোয়ার ব্যাটে বলে হয়নি টার্নারের। কাভার অঞ্চলে থাকা মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দি হন তিনি। শেষের দিকে স্টার্কের অপরাজিত ১৩ রানের ভর করে নির্ধারিত ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ১২১ রানের পুঁজি গড়ে অস্ট্রেলিয়া। বল হাতে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন মুস্তাফিজ।