দেশে করোনা সংক্রমণের প্রকোপ কিছুটা কমে যাওয়ায় আবার মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। শুরুতেই তারা ৩টি উপনির্বাচন মোকাবিলা করতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে গতকাল শনিবার সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এখনো বাকি আছে কুমিল্লা-৭ ও সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের উপনির্বাচন। এ ছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় চার হাজার পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্র ও তৃণমূলের শূন্যপদ পূরণ, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখা, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় তৃণমূলের কমিটি দেওয়া, দলে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনাসহ নানাবিধ কার্যক্রম রয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনা করতে প্রায় এক বছর পর কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকেছে আওয়ামী লীগ। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে এ বৈঠক। মূলত সাংগঠনিক কার্যক্রম বেগবান করে দলকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনমুখী করতে কার্যনির্বাহী কমিটির এ বৈঠক হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের অধিবেশন যোগ দিতে দেশ ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগেই কুমিল্লা-৭ উপনির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করতে তিনি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক করবেন। একই সঙ্গে পৌরসভা ও ইউনিয়নের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্যও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে গত বছর ৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠক সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, দলীয় হাইকমান্ডের পূর্ব নির্দেশ অনুযায়ী সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহের দিকে সাংগঠনিক সফরে যাবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে এর আগেই দলীয়ভাবে করণীয় নির্ধারণ হয়ে যাবে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে। দলের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা আমাদের সময়কে বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। একটি নির্বাচন শেষ হলে পরবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করে। কিন্তু করোনার ভয়াবহতার কারণে কিঞ্চিত ব্যাঘাত ঘটলেও দল এ চিন্তা থেকে সরেনি। মানবিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়েছে দল। তার পরও গত এক বছরে দলের কোথায় কী সংকট ও সম্ভাবনা আছে তা চিহ্নিত করে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করবেন বিভাগীয় পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব) ফারুক খান বলেন, ‘৯ সেপ্টেম্বর আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটি বৈঠক হওয়ার কথা শুনছি। বৈঠকের রীতি অনুযায়ী যেসব রাজনৈতিক সহকর্মীকে হারিয়েছি তাদের বিষয়ে শোক প্রস্তাব পেশ করা হয়। এর পর ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব দিবস আছে তা কীভাবে পালন করব তা নিয়ে কথা হতে পারে। এ ছাড়া কোডিভের এ পরিস্থিতিতে আমাদের ভূমিকা কী হবে, দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা সম্মেলনগুলোর বিষয়ে আলোচনা এবং স্থানীয় সরকার ও জাতীয় সংসদ উপনির্বাচনগুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।’
আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক আমাদের সময়কে বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের সাংগঠনিক টিমে কিছু পরিবর্তন এসেছে। এর পর ওইসব এলাকায় কোনো পরিবর্তন এসেছে কিনা, দলের কোন্দল নিরসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কে কী ভূমিকা রাখছেন সে বিষয়েও নেত্রী বৈঠকে জানতে চাইতে পারেন। এ ছাড়া আট বিভাগে আওয়ামী লীগের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪৩টিতে এখনো মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৫টি, চট্টগ্রামের ৭টি, ময়মনসিংহের ৫টি, রাজশাহীর ৪টি, বরিশালের ৪টি, রংপুরের ৩টি, খুলনার ৩টি এবং সিলেট বিভাগের ১টি সংগঠনিক জেলা রয়েছে। এসব জেলার সম্মেলনের দিন তারিখও নির্ধারণ হতে পারে বৈঠকে।