সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

ঘাড় ব্যথা প্রতিকার ও চিকিৎসা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১
  • ১৬৮ বার

আমাদের প্রত্যেকেরই মোটামুটি একটা কমন সমস্যা ঘাড়ে ব্যথা। এটা যে কোনো বয়সেই হতে পারে। এই ঘাড়ে ব্যথা কারও অল্প সময়ের জন্য হয়, কারও দীর্ঘ সময়ের জন্য থাকে। কেউ অল্প সময় বিশ্রাম নিলে ব্যথা কমে যায়। কিন্তু যখন ঘাড়ের ব্যথার জন্য মাথা চারদিকে নড়াচড়া করতে সমস্যা হয় তখন তাকে আমরা ঘাড়ে ব্যথা বলে চিহ্নিত করি।

মেডিক্যালের ভাষায় স্কালের নিচ থেকে মেরুদ-ের ওপরের সাতটি হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত অংশকে সারভাইকেল রিজন বলে থাকে। এই সারভাইকেল রিজনকে (ঈ১ ঈ২ ঈ৩ ঈ৪ ঈ৫ ঈ৬ ঈ৭) দ্বারা চিহ্নিত করে থাকে। তার সঙ্গে কিছু লিগামেন্ট, মাসেল থাকে যা ঘাড় এবং মাথাকে সংযুক্ত করে। ঘাড়ের যে কোনো ইনজুরির কারণে অথবা মাংসপেশির অতিরিক্ত টানের কারণে অথবা ঘাড়ের হাড়ের ক্ষয়জনিত কারণে ব্যথা বেশি অনুভূত হয়। ঘাড়ের এই ব্যথায় পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

যত কারণ : ঘাড় অথবা কাঁধের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া। ভুল পজিশনের কারণে অথবা দীর্ঘক্ষণ একই পজিশনে বসে থাকার জন্য। লিগামেন্ট ইনজুরির কারণে। ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্কের সমস্যার কারণে। মাথা বা কাঁধে অতিরিক্ত ভারী কিছু বহন করার জন্য। দীর্ঘদিন একই পজিশনে কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহার করার জন্য। ভ্রমণ করার সময় পেছন থেকে ধাক্কা লাগলে। উচ্চ বা নিম্নরক্তচাপের কারণে হতে পারে। হাড়ের ক্ষয়জনিত কারণে হতে পারে যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সারভাইক্যাল স্পন্ডালাইসিস পোলিওমাইলাইটিস সারভাইকেল ডিস্ক প্রলাপ্স ইত্যাদি।

সাবধানতা : দীর্ঘক্ষণ একই পজিশনে ঝুঁকে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ঘুমানোর সময় নরম এবং নিচু বালিশ ব্যবহার করতে হবে। একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করতে হবে। মাথায় ও কাঁধে ভারী কিছু বহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্রাম নিতে হবে। ভ্রমণ করার সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন কোনো প্রকার ধাক্কা ঘাড়ে না লাগে। নরম বিছানা ও উঁচু বালিশে দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকা যাবে না।

চিকিৎসা ব্যবস্থা : ঘাড় ব্যথার চিকিৎসার জন্য ঘাড়ে কোনো প্রকার মেসেজ বা মালিশ করা যাবে না। ঘাড়ে বা কাঁধে ব্যথা হলে একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করালে ঘাড় ব্যথা থেকে তাড়াতাড়ি মুক্তি মিলবে। ব্যথা বেশি হলে একজন বিশেষজ্ঞ (মেডিসিন) চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। ঘাড়ে কুসুম গরম পানির সেঁক নিলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। যাদের কাজের প্রয়োজনে সামনের দিকে ঝুঁকতে হয় তারা ঘাড়ের সাপোর্ট হিসেবে সার্ভাইক্যাল কলার ব্যবহার করতে পারেন। ভুল দেহভঙ্গির কারণে ব্যথা হলে তা সংশোধন করে নিলে ব্যথা কমে যাবে। একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

ব্যথার ধরন অনুযায়ী কিছু ফিজিক্যাল এবং রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে। ব্যথার ধরন অনুযায়ী রোগীকে কিছু সময়ের জন্য বিশ্রামে থাকতে হতে পারে এবং সাপোর্ট হিসেবে সার্ভাইক্যাল কলার সার্ভাইক্যাল পিলো জাতীয় এক্সেসরিজ ব্যবহার করা লাগতে পারে। যদি ইনজুরির কারণে ব্যথা খুব জটিল পর্যায়ে চলে যায় তা হলে অনেক সময় সার্জারির প্রয়োজন হয়ে থাকে। ঘাড় ব্যথার সঠিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা এবং পরামর্শ পেতে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

লেখক : চিফ কনসালট্যান্ট (ফিজিও)

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com