গান, কবিতা আর কথায় প্রায় আড়াই ঘণ্টার অনলাইন অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়াসহ নানা দেশের অভিবাসীরা বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংস আক্রমণের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে এর বিরুদ্ধে দৃঢ প্রতিরোধ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন। অনুষ্ঠানে ১৫টি দেশে বসবাসকারী দুই শ’র বেশি অভিবাসী বাঙালি স্বাক্ষরিত প্রতিবাদ ঘোষণা পাঠ করা হয়।
২৪ অক্টোবর উত্তর আমেরিকা বাংলা সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী অভিবাসী সাহিত্য মঞ্চের এই প্রতিবাদ সভায় যোগ দেন যুক্তরাজ্য থেকে সাহিত্য গবেষক গোলাম মুরশিদ, অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহান, কবি শামীম আজাদ, সংস্কৃতকর্মী ইমতিয়াজ আহমেদ, কানাডা থেকে কবি দিলারা হাফিজ, অস্ট্রেলিয়া থেকে গবেষক অধ্যাপিকা নিরুপমা রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবেশকর্মী কামরুল আহসান খান, ফ্রান্স থেকে সংস্কৃতিকর্মী রবিশংকর মৈত্রী ও আমীরুল আরহাম। যুক্তরাষ্ট্র থেকে একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, মুক্তিযোদ্ধা ও সংস্কৃতিকর্মী তাজুল ইমাম, অধাপক মোস্তফা সারওয়ার, অধ্যাপক হায়দার খান, জ্যোতির্বিদ ও লেখক দীপেন ভট্টাচার্যসহ আরো অনেকে।
অনলাইন অনুষ্ঠানে মহীতোষ তালুকদার তাপস যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্য থেকে যোগ দেন। তিনি হেমাঙ্গ বিশ্বাস ও সলিল চৌধুরীর গান পরিবেশন করেন। বিভিন্ন বক্তারা বক্তব্য প্রকাশের সময় কখনো কখনো আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন। শিকাগো থেকে যোগ দেন শৈবাল তালুকদার। তিনি কবিতা পাঠের সময় তার কণ্ঠ অশ্রুরুদ্ধ হয়ে যায়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখিকা পূরবী বসু সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হওয়ায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। অনুষ্ঠানে তার দুটি কবিতা পাঠ করা হয়।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনার প্রতিবাদে সংগঠনের সদস্যরা অভিবাসী বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে একটি ঘোষণার স্বপক্ষে বিশ্বব্যাপী স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন। মাত্র কয়েকদিনে ইমেল আর ফেসবুকের মাধ্যমে পাঁচটি মহাদেশের ১৫টি দেশ থেকে ২১০ জন অভিবাসী বাঙালি এই ঘোষণার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে স্বাক্ষর করেন। বেশির ভাগ স্বাক্ষরকারী যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুকরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন। তার সঙ্গে যুক্ত হন ইরান, জাপান, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া, লিবিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, সুইডেনের অভিবাসী বাঙালি।