খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে। এর আগে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী, খুলনার খানজাহান আলী থানা পুলিশ ও কুষ্টিয়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর খোঁড়ার কাজ শুরু হয়।
ওই সময় কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, লাশ তোলার পর কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে সেলিমের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। পরে লাশটি আবার ওই কবরেই দাফন করা হবে।
খুলনার খান জাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিক্ষক সেলিমের লাশ তোলার কাজ শুরু হয়। আদালতের নির্দেশমতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ তোলা হচ্ছে।’
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু হয়। শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর পর অভিযোগ উঠেছে, কুয়েটে শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ কয়েকজন ছাত্র তাদের মনোনীত প্রার্থীকে ডাইনিং ম্যানেজার করার জন্য হল প্রভোস্ট ড. সেলিম হোসেনকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্ররা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তারা শিক্ষককে ধরে নিয়ে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা ওই শিক্ষকের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এরপর শিক্ষক সেলিম দুপুরে খাবার খেতে ক্যাম্পাস সংলগ্ন বাসায় যান। বিকাল ৩টার দিকে স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, কুয়েটের সিন্ডিকেটের ৭৭তম (জরুরি) সভার সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়াতে এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম এবং হলসমূহ বন্ধের সময়সীমা আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সেইসঙ্গে শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৯ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।