গুরুতর মানবাধিকার লংঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ অভিযোগে বাংলাদেশের পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব’র ছয়জন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার মার্কিন অর্থ দফতরের ‘ফরেন অ্যাসেটস কনট্রোল অফিস’ (ওএফএসি) বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মোট ১০টি প্রতিষ্ঠান ও ১৫ জন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে – যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নিপীড়নের সাথে সংশ্লিষ্ট বলে নিষেধাজ্ঞায় উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না। এরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলেও বিবেচিত হবেন। আর র্যাবও প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কাছ থেকে যেসব সহযোগিতা পাচ্ছিলো সেগুলো বাতিল হতে পারে। একইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত বেনজির আহমেদ ও র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ র্যাবের আরও চারজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার বিদেশে সম্পদ থাকলে সেগুলো বাজেয়াপ্ত হতে পারে।
এদিকে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া গণতন্ত্রের সম্মেলনেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রন জানানো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের সম্মেলনে বাংলাদেশকে দাওয়াত না দেয়ার এই বিষয়টিকে দেশটির ‘ভূরাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের’ প্রতিফলন হিসেবে দেখছে কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ। একইসঙ্গে ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল ধরাতে ‘তৃতীয়পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে’ দাবিও করা হয়েছে। তবে থেমে নেই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত দেশবিরোধী শক্তি বিএনপি-জামাত। অঢেল অর্থবিত্ত নিয়ে ছদ্মনামে সরকারের বিরুদ্ধে নানা প্রপাগান্ডায় লীপ্ত রয়েছে তারা। ক্যাসিডি এন্ড ক্যাসেডি বা ক্যাসেডি অ্যাসোসিয়েটস লবিষ্ট কোম্পানী মীর কাশেম আলীর সাথে ২৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল। এরকম অনেকি লবিষ্ট ফার্ম দেশবিরোধী চক্রের অর্থায়নে ক্রমাগত রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লীপ্ত রয়েছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ধীরে বিএনপি-জামাতের অনেক নেতাকর্মী জনবল অর্থবল নিয়ে এখন সামনে আসতে শুরু করেছে। এতদিন এইসব নেতাকর্মীদের আসল চেহারা উন্মোচিত না হলেও ধীরে ধীরে এদের আসল রূপ প্রকাশ হতে শুরু করেছে। আর দলীয় কোন্দলতা পছন্দ অপছন্দের কারেন এদেরকেই ইন্ধন জোগাচ্ছে সরকার দলেরই একটা সুবিধাবাদী চক্র।
রাষ্ট্রবিরোধী চক্র শক্তিশালী হয়ে উঠতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। দেশ বিরোধী রাষ্ট্রবিরোধী বিএনপি-জামাত-শিবির চক্র ছদ্মনামে অঢেল অর্থ ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনে কাজ করছে, সরকারের বিরুদ্ধে লবিষ্ট নিয়োগ করে দিনরাত যুক্তরাষ্ট্র প্রাশসনকে ইন্ধন যোগাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করে সোস্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেটে লাগাতার সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। নিউইয়র্ক-ভিত্তিক অর্গানাইজেশন ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস (ওপিজি) হাশ ব্ল্যাকওয়েল স্ট্র্যাটেজিস (এইচবিএস) নিয়োগ করেছে যাতে এমন কোনো পরিবেশ তৈরি করা না হয় যেখানে জামায়াতকে বাংলাদেশের বা আন্তর্জাতিক স্তরে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
এদিকে হোয়াইট হাউজের সামনে হোমলেস বা গৃহহীন মানুষ ভাড়া করে দেশের বিরুদ্ধে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র প্রচার প্রপাগান্ডা শুরু করেছে এই ছদ্মবেশী দেশ ও রাষ্ট্রবিরোধী বিএনপি-জামাত। আমেরিকান-বাংলাদেশ ডায়াসপোরা কমিউনিটিস, ইউএসএ নামে একটি সংগঠনের নামে হোয়াইট হাউজের সামনে প্ল্যাকার্ড বসিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে দিনরাত ২৪ ঘন্টা অপপ্রচার শুরু করেছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে কোন ধারনা নেই বাংলাদেশকে চিনেও না এমন গৃহহীন মানুষ ভাড়া করে হোয়াইট হাউজের সামনে বসিয়ে দেয়া হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। ক্রমাগত কুৎসা রটনা হচ্ছে সরকার ও দেশের বিরুদ্ধে।
যুক্তরাষ্ট্রে দেশবিরোধী রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির ক্রমাগত অপপ্রচার রোধে এখনই বাংলাদেশ সরকারের সঠিক এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিত।