মুখে মাস্ক, গলায় বর মালা। সঙ্গে স্কুল খোলার অনুরোধ জানিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে বিয়ের পিঁড়িতে বসে রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছেন এক স্কুলশিক্ষক। প্ল্যাকার্ডে তার আরজি, ‘করোনাবিধি মেনে আমরা বিয়ে করতে পারলে, অনুরোধ স্কুলগুলোও খোলা হোক।’ অভিনব কায়দায় বিয়ে করে এখন আলোচিত আলিপুরদুয়ারের কুমারপাড়া মথুরাবাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অসীম দাস। তার প্রতিবাদ এখন শিক্ষামহলে চর্চার বিষয়।
করোনা সংক্রমণ রুখতে রাজ্যজুড়ে জারি বিধিনিষেধ। সামাজিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ২০০ জন অতিথির উপস্থিতিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এমনকি খোলা মাঠেও অনুষ্ঠানে ছাড় রয়েছে। তবে এখনো বন্ধ স্কুল ও কলেজ। অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে মতবিরোধ রয়েছে যথেষ্ট। স্কুল খোলা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। এই পরিস্থিতিতে আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক অসীম দাস বিয়ের মাধ্যমে প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন। নিজের দাবি জানাতে বিয়ের অনুষ্ঠানকেই হাতিয়ার করেছেন তিনি।
ভারতের সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়েছে, ফালাকাটার সুভাষ পল্লির বাসিন্দা অসীম দাস। বেশ কয়েক বছর ধরেই এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। গত সোমবার নিজের বাড়িতে বিয়ের আসর বসান ওই স্কুলশিক্ষক। কোভিডবিধি মেনে বিয়ে করেন তিনি। তাই বর কনে হোক কিংবা আমন্ত্রিত, সকলের মুখেই ছিল মাস্ক। বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ করে বিয়ে সারলেন তারা। এ পর্যন্ত আর পাঁচটা বিয়ের সঙ্গে অসীম দাসের বিয়ের কোনো তফাৎ নেই। তবে অসীম দাসের হাতের দিকে চোখ পড়তেই সকলে অবাক হয়ে যান। কারণ, তার হাতে ছিল একটি প্ল্যাকার্ড।
অসীম দাস স্পষ্ট জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত নষ্ট হচ্ছে। তাই স্কুল খোলার দাবিতে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে বিয়ের আসরে বসেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘নিজে স্কুলে শিক্ষকতা করি। সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের স্কুল ছাড়া পড়াশোনার আর কোনো উপায় নেই। এতদিন ধরে স্কুল বন্ধ। ফলে তাদের পঠনপাঠনও ঠিকমতো হচ্ছে না। আমরা বেতন পাচ্ছি প্রতি মাসে, কিন্তু শিক্ষা? সেটাই বন্ধ হয়ে আছে। তাই অনুরোধ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলগুলো খোলা হোক।’