বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন

এত সম্পদ তারপরও লতা ছিলেন মাটির মানুষ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১৩৬ বার

‘যদি বিশ্বের সব সুগন্ধি, সব চাঁদের আলো আর সমস্ত মধু একসঙ্গে করা হয়- এর পরও তা লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠের মতো কিছু তৈরি হবে না।’ এক সাক্ষাৎকারে কথাটা বলেছিলেন কবি ও গীতিকার জাভেদ আখতার। আর মান্না দে বলেছিলেন, ‘লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে ঈশ্বর বাস করেন।’ অন্যদের কাছে তিনি ছিলেন গানের সরস্বতী।

সংগীতের এই মহাতারকা না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন সরস্বতীর পূজার পর দিনই। জানুয়ারি মাসের শুরুতে করোনা আক্রান্ত হন লতা মঙ্গেশকর। ৮ জানুয়ারি থেকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। একসময় করোনামুক্ত হলেও পরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হয়েছিল। তবে শনিবার (৫ ফেব্রæয়ারি) শারীরিক অবস্থার আবার অবনতি হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় বোনকে দেখতে হাসপাতালে যান আশা ভোঁসলে। তখন থেকে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টা ব্যর্থ করে রবিবার (৬ ফেব্রæয়ারি) চলে যান সুরের সম্রাজ্ঞী।

লতা মঙ্গেশকরের গোটা জীবনটাই সংগীতের জন্য নিবেদিত ছিল। সারা বিশ্বে ‘কোকিলকণ্ঠী’ নামে যিনি সমাদৃত ছিলেন, তার প্রথম রোজগার ছিল মাত্র ২৫ টাকা! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। লতার পরিবারেই সংস্কৃতির চর্চা ছিল। বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর নাটকের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই সূত্রেই নাটক ও গানের সঙ্গে পরিচিতি তার। লতার প্রথম সংগীত গুরু তারই দিদিমা। লোকগানের হাত ধরে সংগীত শিক্ষা শুরু করেছিলেন তিনি। যখন প্রথম রোজগার করেন, তখন লতার বয়স মাত্র ১৩ বছর। ২৫ টাকা দিয়ে রোজগার শুরু করেছিলেন। এর পর তো স্বপ্নের উড়ান। দেশের গÐি পেরিয়ে বিশ্বদরবারেও মানুষের মন জয় করেছিল তার সুরেলা কণ্ঠ। বিভিন্ন রিপোর্ট বলছে, বর্তমানে সুরসম্রাজ্ঞীর মাসিক আয় ছিল প্রায় ৪০ লাখ টাকা। বছরে পেতেন প্রায় ৬ কোটি টাকা। সেই অর্থ আসত তার গানের রয়্যালটি থেকে। কোনো কোনো রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ‘নাইটেঙ্গল অব ইন্ডিয়া’র সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৭০ কোটি টাকা। কেউ কেউ অবশ্য দাবি করেছেন, তিনশ কোটি নয়, লতার সম্পত্তির পরিমাণ ১০৭-১১৫ কোটি। এর পরও তিনি ছিলেন মাটির মানুষ। কাছ থেকে কিংবদন্তি শিল্পীকে যারা চিনতেন, সকলেই বলেছেন এ কথা।

সংগীত জীবনে ৩৬টি ভাষায় ৩০ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। গাড়ির প্রতি শৌখিন ছিলেন তিনি। লতার বাাড়ি প্রভুকুঞ্জের গ্যারেজে ছিল একসময় অনেক দামি গাড়ি। একাধিক সাক্ষাৎকারে গাড়ির প্রতি নিজের ভালোবাসা ব্যক্ত করেছেন বহুবার। ক্যারিয়ারের শুরুতেই কিনেছিলেন একটি শেভরলে। যশ চোপড়া তাকে উপহার দিয়েছিলেন মার্সিডিজ বেঞ্জ। তার একটি ক্রিসলার গাড়িও ছিল। ৯২ বছর বেঁচে ছিলেন লতা। এর মধ্যে আট দশকজুড়েই তিনি ছিলেন গানের জগতের প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন সুরসম্রাজ্ঞী। আনন্দ কিংবা বিষাদে শ্রোতারা বারবার আশ্রয় নিয়েছেন লতার গানে-সুরে-কণ্ঠে। আগামী দিনেও সংগীতপিপাসুরা বারবার আশ্রয় নেবেন তার গানেই।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com