প্রচণ্ড তাড়া। অফিস ছুটতে হবে। হাতে সময় নেই। অতএব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গপাগপ করে হাতের গোড়ায় যা পাচ্ছেন তা-ই গিলছেন। এই যদি রোজকার অভ্যাস হয়ে থাকে শিগগিরি পাল্টান। কারণ, আপনি তো জানেনই না, তাড়াহুড়োর চোটে কত বড় সর্বনাশ করছেন নিজের। এভাবে খেলে রোজ একটু একটু করে অবসাদে ডুবতে থাকবেন আপনি। স্বাদও পারেন না খাবারের। জানেন সেটা? এমন অজানা বিষয় সম্প্রতি জানিয়েছে জার্নাল অব কনজিউমার রিসার্চ।
শুধু কী তাই! কোন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন সেটাও নাকি স্বাদগ্রহণের পক্ষে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, জানিয়েছেন সমীক্ষকেরা। তাদের কথায়, দাঁড়ানোর বদলে যদি বসে শান্তিতে খান তাহলে স্বাদ আরো বেশি করে পাবেন।
কারণ, ভঙ্গি, শরীরের ভারসাম্যের সঙ্গে স্বাদগ্রহণের বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই দাঁড়ানোর থেকে বসে খেলে সবাই খাবারে বেশি স্বাদ পান।
“অনেক সময়েই দেখা যায়, যেসব বাচ্চারা খেতে ভালোবাসে না বা খাবার দেখলেই উল্টা দিকে পালায় তাদের ভুলিয়ে খাওয়াতে গিয়ে মা-বাবা জানালা বা কোথায় দাঁড় করিয়ে ঝপাঝপ করে খাওয়াতে থাকেন। দাঁড়ানোর পদ্ধতি যদি সঠিক হয় তাহলে বাচ্চারা অনেক সময়েই চুপচাপ খেয়ে নেয় । কিন্তু তা না হলে ওদের বিরক্তি আরো বাড়ে। কিছুতেই খেতে চায় না- জানিয়েছেন সাউথ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, লেখক, গবেষক দীপায়ন বিশ্বাস।
কেন এমনটা হয় জানেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, দাঁড়িয়ে থাকার ফলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আমাদের নিচের দিকে আকর্ষণ করে। এতে শরীরের রক্ত নিচের দিকে প্রবাহিত হয়। এবং তা তুলে সারা শরীরে ছড়িয়ে দিতে কষ্ট হয় হৃদপিণ্ডের। ফলে বেড়ে যায় হৃদস্পন্দন। আর তাতেই বাড়তে থাকে হাইপো থ্যালামিক পিটুইটারি অ্যাড্রিনালিন। স্ট্রেস হরমোনকে বাড়িয়ে দেয়।
আর শরীর অবসন্ন হলে কী করে খাবারের স্বাদ নেবেন! এমনকি, সামান্য শারীরিক সমস্যাতেই স্বাদু খাবারও বিস্বাদ হয়ে যায়।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে সমীক্ষকেরা ৩৫ জনকে পিটা চিপস খেতে দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে কিছুজন খেয়েছে দাঁড়িয়ে। বাকিরা খেয়েছেন বসে। যারা দাঁড়িয়ে খেয়েছেন , তারা পিটা চিপসের কোনো স্বাদই পাননি! যারা আরাম করে বসে খেয়েছেন তাদের কাছে অমৃততুল্য চিপসের স্বাদ।
এরপরেই সমীক্ষকেরা হাতে ভারী ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে খেতে দেন ফ্রুট স্ন্যাকস। আগের মতোই অর্ধেকে খান দাঁড়িয়ে। বাকিরা বসে। এবার নাকি খাবারের স্বাদ সবেচেয়ে বিস্বাদ ঠেকেছে সবার কাছে!
সূত্র : এনডিটিভি