স্যানফোর্ড বাৎসরিক পিঠা উৎসব কমিটির উদ্যোগে সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা স্যানফোর্ডে-৪ ঠা জানুয়ারি ২০২০ শনিবার এক বর্ণাঢ্য পিঠা মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেই পিঠা মেলা বাঙালির মিলন মেলায় পরিণত হয়। অতীতের সব পিঠা মেলার রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে এবার প্রথম সর্বমোট ১৪১টি পিঠা রেকর্ড করা হয়। হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ১০ জনকে শ্রেষ্ঠ পিঠা বিজয়ী হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়। দশটি পুরস্কারের মধ্যে ছিল দুইটি স্বর্নের চেইন,MK ব্যাগ এবং সাতটি জামদানি শাড়ি।ৱ্যাফেল ড্ররের পুরস্কারের মধ্যে ছিল অরলান্ডো টু ঢাকা রাউন্ড টিকেট, আপেল ওয়াচ,আইপেড এবং প্রত্যেকটি অংশগ্রহণকারীকে একটি করে শাড়ি উপহার দেয়া হয়। প্রতিটি পিঠা গ্রহণ এবং বিচার করার জন্য কমিটি করা হয় । পিঠা গ্রহণ করেন বুলবুল আহমেদ,সায়িদ হোসেন(মিলন), জাহাঙ্গীর আলম, আজগর, টুলু ভুইয়া এবং তাদের সহযোগিতা করেন টিটু বেপারী। পিঠার বিচারক ছিলেন সামসুর রহমান(সামু), আবেদ আলী, ডা. রিপন, নাজমা বুলবুল, লিপি বেগম, সুমি ভাবি। পিঠা উৎসবের অন্যতম সংগঠক সাইফুল ভুইয়া(দুলুর) তত্ত্বাবধানে এবং টনি হোসেনের সাবলীল উপস্থাপনায় অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হয়।সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সানু ভাই, ফিরোজ আহমেদ, নান্টু চৌধুরি, রিপন ভাই, বাসার ভুইয়া, জাহাঙ্গীর আলম, আজগর আলি, সাহাদাৎ মিসু,বিদ্যুত হোসেন, বাবলু ভাই, টিপু ভাই, রয়েল ভাই, তাহের ভাই, তারেক ভাই, রফিক ভাই, টিটু বেপারী, সবনম ভুইয়া, সোহেলী চৌধুরি শাহানাজ রুনা, ঝর্ণা ভাবি, রুমি ভাবি, লিপি ভাবি প্রমুখ। যাদের রাত দিন অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এই পিঠা মেলাটা সফল হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পল্লি ইসলাম, বাচ্চু ভুইয়া, বাদল ভুইয়া এবং শাহিনা চৌধুরি। অনুষ্ঠানে বাচ্চাদের নৃত্য পরিবেশন ছিল চোখে পড়ার মতো যার অরগানাইজ করেন আমাদের সেতু ভাবি। এবারের পিঠা মেলায় দর্শকদের একটু ভিন্ন রকম আনন্দ দেওয়ার জন্য আয়োজন করা হয় ধাঁধা প্রতিযোগিতা। এই ধাঁধা প্রতিযোগিদের জন্য তিনটি এক্সক্লুসিভ গিফ্ট উপহার দেওয়া হয় এই উপহারগুলো স্পনসর করেন টিটু বেপারী আর ধাঁধা প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন টনি হোসেন। রান্নার পুরো দায়িত্বে ছিলেন মাস্টারসেভ খ্যাত তাহের ভাই,যার অক্লান্ত পরিশ্রমে বরা-বরই খাবার মুখ রুচক হয়ে উঠে। যার পরিশ্রম লিখে শেষ করা যাবেনা। পিঠা মেলার অতিথিবৃন্দ অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে অনুরোধ করে এরকম সুন্দর প্রোগ্রাম যেন ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকে।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনুষ্ঠানে প্রথমে একটু সমস্যা হলেও দুপুর ১ টা থেকে মানুষ পিঠা নিয়ে আসা শুরু করে। ২.৩০ মিনিট থেকে পিঠা মেলায় মানুষের ঢল নামে।পিঠা মেলার এক যুগ উপলক্ষে সব ভাবিদের শাড়ি আগেই তাদের হাতে পৌছিয়ে দেওয়া হয়।আর সেই শাড়ি পড়ে যখন সব ভাবিরা পিঠার ডালা হাতে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন তখন যেন সেই গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য বাহারি রঙে সেজেছিল স্যানফোর্ড ডার্বি পার্ক। এ যেন এক অন্যরকম দৃশ্য। আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দর মুখে ছিল যেন এক আনন্দের উচ্ছ্বাস। অতিথিবৃন্দের কথোপকথনে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলতে শোনা যায় বিদেশের বাড়িতে এতো বাহারি সাজে, এতো বাহারি পিঠার সমাগম কখনো দেখিনি! অনুষ্ঠানটি ক্যামেরা বন্দি করেন আমাদের সাহাদাত মিসু ভাই। প্রথমতো পিঠা রাখার জন্য যেই স্হান নির্ধারণ করা হয়,পরে এতো পিঠার সমারহ ঘটে যে,স্হানের পরিধি বাড়াতে হয়।বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি সামদুস তোহা বলেন যে আমার জীবনের দেখা পিঠা মেলার মধ্যে এটা ছিল অন্যতম।এতো পিঠার সমাগম কখনো আমার চোখে পড়েনি।কমিউনিটির পরিচিত মুখ ইলিয়াস ঠাকুর বলেন আমি সত্যিই অভিভূত এতো সুন্দর আয়োজন এতো পিঠার সমারোহ,বৈরি আবহাওয়ার পরেও এতো মানুষের উপস্থিতি দেখে।পিঠা মেলার আয়োজকদের সবার মুখে একটাই কথা ছিল আমাদের উদ্দেশ্য এই প্রবাসের মাটিতে সবাইকে আনন্দ দেওয়া। পিঠা কমিটির অন্যতম সংগঠক দুলু ভুইয়া, টনি হোসেন, নান্টু চৌধুরি এবং ফিরোজ হোসেন বলেন আমরা এই অনুষ্ঠান আমাদের সাধ্যমত সুন্দর করার চেষ্টা করেছি ভবিষ্যতে আরো সুন্দর করবো ইনসআল্লাহ্। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে এক যুগ উপলক্ষে কেক কাটা হয় ।