বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫১ পূর্বাহ্ন

মাঠে মাঠে হলুদ ফুলের হাতছানি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২০
  • ২৭০ বার

রাজশাহীর বাগমারার বিভিন্ন এলাকার কৃষি মাঠজুড়ে এখন হলুদ ফুলের হাতছানি। এখন উপজেলার প্রতিটি মাঠই যেনো ফুটন্ত সরিষা ফুলের হলুদ রঙে ভরে গেছে। যে দিকে দু’চোখ যায় শুধু সরিষা ফুলের সমারোহ।

সরজমিনে বাগমারার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌর এলাকার কৃষি মাঠজুড়ে এখন সরিষার হলুদ ফুলের হাতছানি। মাঠের যে দিকেই তাকাই চোখে পড়ছে শুধু সরিষা ফুলের হলুদ আর হলুদ রঙ। এবার সরিষা চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফলে সরিষা চাষে লাভবান হওয়ার আশায় কৃষকের মুখে হাসিও ফুটেছে। গত বছর আবহাওয়া অনুকুলে না থাকার কারণে সঠিক সময়ে জমিতে বীজ বপন করা সম্ভব হয়নি। তবে এবার সহজে সার ও বীজ পাওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকেরা সঠিক সময়ে জমিতে বীজ বপন করার সুযোগ পেয়েছেন। এ কারণে উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুন জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরিষা অধিক লাভজনক একটি ফসল। সরিষা চাষে আর্থিক খরচ ও শ্রম দুটিই কম লাগে। তাছাড়া গত বছর সরিষার ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা এবার ব্যাপকভাবে সরিষা চাষ করেছেন।

গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের জিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক জানবক্স জানান, গত বছর তিনি চার বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলেন। এতে তার খরচ হয়েছিলো প্রায় তিন হাজার টাকা। কিন্তু এর বিপরীতে তিনি লাভ পেয়েছিলেন প্রায় ১২ হাজার টাকা। এ কারণে এবার তিনি ছয় বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।

হরিপুর গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম হোসেন জানান, বিঘা প্রতি সরিষার ফলন হয় সর্বোচ্চ ৩-৪ মণ পর্যন্ত। হাটগাঙ্গোপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী আলী মুদ্দিন ও আমজাদ হোসেন জানান, বর্তমানে প্রতিমণ সরিষা এক হাজার চার শ’ থেকে এক হাজার আট শ’ টাকা দরে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে।

বাগমারা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় নয় হাজার তিন শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু কৃষকেরা সরিষা আবাদ চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়ায় লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়ে গেছে। তবে চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি জমিতে চাষ হয়েছে টরি-৭ জাতের সরিষার আবাদ। পুরো উপজেলায় এবার মোট ১২ হাজার সাত শ’ ১৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে দেশী টরি-৭ জাতের সরিষার চাষ হয়েছে আট হাজার দুই শ’ ১০ হেক্টর জমিতে। অবশিষ্ট দুই হাজার তিন শ’ হেক্টর জমিতে জাপানী এবং দুই হাজার দুই শ’ পাঁচ হেক্টর জমিতে রাইসহ বিভিন্ন জাতের সরিষা চাষ হয়েছে।

বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষে আর্থিক খরচ ও শ্রম দুটিই কম লাগে। এ কারণে এ অঞ্চলের কৃষকেরা এবার সরিষা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন। তাছাড়া আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং সরিষা গাছের ফুটন্ত হলুদ ফুলে মৌমাছিরা সঠিকভাবে পরাগায়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম হওয়ায় এ উপজেলায় এবার সরিষার ফলন ভালো হবে। এ ক্ষেত্রে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com