রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২৮ অপরাহ্ন

মিরসরাইয়ে জমে উঠেছে মৌসুমি ফলের বেচাকেনা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২১ মে, ২০২২
  • ১৮৫ বার

আম, কাঁঠাল, আনারস, জাম, লেবুসহ মৌসুমি ফলে ভরপুর হয়ে উঠেছে মিরসরাইয়ের বাজারগুলো। সবচেয়ে বড় ফলের বাজার করেরহাট, বারইয়ারহাট পৌর বাজার ও বড়দারোগাহাট। ফলন ভালো হওয়ায় এবার কৃষকরাও অন্যান্য বছরের তুলনায় পরিমাণে বেশি ফল বিক্রির জন্য বাজারে আনছেন। ভৌগলিকভাবে পাহাড়ী জনপদে সমৃদ্ধতার কারণে মৌসুমি ফল বিক্রির জন্য বাজার দু’টির সুখ্যাতি ব্যাপক। এবারো সকল ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখানে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা আসেন মৌসুমি ফল কেনার উদ্দেশ্যে। সড়কপথে যোগাযোগ সুবিধা ও তুলনামূলক কম দামে পাইকারিতে ফল বেচা-কেনা হয় বলে করেরহাট ও বারইয়ারহাটে মৌসুমী ফলের হাট জমজমাট থাকে সব সময়।

জানা গেছে, উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের বড় একটি অংশ উঁচু-নিচু টিলা আর পাহাড়বেষ্টিত বলে এ এলাকায় এসব ফল সহজে চাষাবাদ হয়। এর মধ্যে গ্রীষ্মকালীন নানা জাতের ফল চাষাবাদ, বাজারজাত ও বিক্রয়ের অন্যতম একটি স্থান হলো এই বাজার। একসময় সীমিত আকারে করেরহাট ও এর আশপাশের এলাকায় আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, জাম্বুরাসহ নানা জাতের মৌসুমি ফল উৎপাদন করা হতো। এখন এসব এলাকার সর্বত্রই আর্থিক উপার্জনের কথা ভেবেই বসতবাড়ির আঙিনা, খোলা পতিত জমি, এমনকি বন্দোবস্তি জমি নিয়ে খাসজমিতে গ্রীষ্মকালীন ফল চাষাবাদ করা হচ্ছে। এভাবে করেরহাট এলাকায় বেশ কয়েকটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ফলের বাগান গড়ে উঠেছে। এসব বাগানে বাণিজ্যিকভাবে প্রচুর পরিমাণে আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু, পেয়ারা, পেঁপে, ইত্যাদি চাষাবাদ করে বছরে প্রচুর পরিমাণে আয় করা হয়। করেরহাট ইউনিয়নের ফরেষ্ট অফিস, সাইবেনী খিল, ঘেড়ামারা, কালাপানি, বদ্ধ, কয়লাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে ফলের চাষ হয়। এসব এলাকায় কয়েক শত আম, কাঁঠাল, লেবুসহ বিভিন্ন ফলের বাগান রয়েছে।

সরেজমিনে করেরহাট বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মধু ফলের মৌসুমে করেরহাট বাজারের চেহারাই বদলে যায়। বাজারের প্রধান সড়কের দুই পাশে চলে আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, জামরুল ও লিচুর খুচরা-পাইকারি বিক্রেতাদের বিকিকিনি। এলাকাটি তখন একটি মিষ্টিমধুর গন্ধে ভরে যায়। অধিকাংশ সময় বাজারের নির্দিষ্ট স্থানে সংকুলান না হওয়ায় বিক্রেতারা সড়কের ওপরেই ফলের পসরা সাজিয়ে বসে পড়ে। হাটবারের আগের রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে আম, কাঁঠাল, আনারস নিয়ে বিক্রেতারা বাজারে আসতে থাকে। পাইকারি বিক্রয় বেশি হলেও খুচরা বিক্রির পরিমাণও কম নয়।
পাইকাররা হাটবার ভোর থেকেই স্থানীয় চাষী ও বিক্রেতাদের কাছ থেকেই ফল সংগ্রহ শুরু করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাইকাররা তাদের সংগ্রহ করা ফল নিজস্ব পরিবহনে করে বোঝাই করে নিয়ে যায়। এখানকার কাঁঠাল ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে পাইকাররা। এ বাজারে কাঁঠালের বিকিকিনি বেশি হলেও আনারস, লেবুর বিক্রয় উল্লেখ করার মতো।

বারইয়ারহাট বাজারের ফল ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল বলেন, তিনি এই মৌসুমে হেঁয়াকো, রামগড় থেকে পাইকারীতে আনারস কিনে এনে বিক্রি করছেন। প্রতি পিস আনারস পাইকারিতে ২৫-৪০ টাকা কেনা হলেও আকার ভেদে তা বিক্রি করছেন ৭০-১০০ টাকা। তার থেকে আনারস কিনে পাইকাররা দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে যান বলে জানান তিনি।

বারইয়ারহাট পৌর বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হেদায়েত উল্লাহ বলেন, উত্তর চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক রাজধানীখ্যাত বারইয়ারহাট পৌর বাজার মৌসুমি ফল বিক্রির জন্য অনেক প্রসিদ্ধ। এখানে মিরসরাই ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা ফল এনে পাইকারী বিক্রি করেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় বারইয়ারহাট বাজার থেকে মৌসুমি ফল দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, স্থানীয় ও পাহাড়ি অঞ্চল থেকে কৃষকরা যেন তাদের উৎপাদিত মৌসুমি ফল নির্বিঘ্নে বেচা-কেনা করতে পারে এ জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। বাইরের পাইকারেরা এখান থেকে বিভিন্ন ফল ক্রয় করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা সহ অনেক জেলায় নিয়ে যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com