শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৫ পূর্বাহ্ন

রিয়াল মাদ্রিদের অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৯ মে, ২০২২
  • ১১২ বার

প্যারিসের নাটকীয় এক রাতে লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।

ঠিক আট মাস আগে স্পেনের এই ক্লাবটি মুদ্রার উল্টোদিকে ছিল, সেখান থেকে একের পর এক হারতে থাকা ম্যাচে জয় ছিনিয়ে এনে শেষ পর্যন্ত ট্রফিটাও মাদ্রিদেই নিয়ে গেলেন কারিম বেনজেমা ও তার সতীর্থরা।

রিয়াল মাদ্রিদের সদ্য পাওয়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা এসেছে নাটকীয় সব ম্যাচ এবং দুর্দান্ত সব ফিরে আসার গল্প রচনা করে।

প্যারিসে ৩৬ মিনিট দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচের ৫৯ মিনিটে গোল করেন ব্রাজিলের ভিনিসিয়াস জুনিয়র- এই এক গোলের কারণে রিয়াল মাদ্রিদের সাথে আর ‘হিসেব চুকানো হয়নি’ মো: সালাহর।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ঘরের মাটিতে মলদোভার তুলনামূলক কম পরিচিত ইরোপিয়ান ক্লাব শেরিফ তিরাসপোলের কাছে হেরে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ।

সেখান থেকে ইউরোপের সেরা ক্লাবের এই শিরোপা জিতলো ক্লাবটি- তাও ১৪তম বার।

ইউরোপের অন্য যেকোনো ক্লাবের তুলনায় দ্বিগুণ সংখ্যক চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা রিয়াল মাদ্রিদের ট্রফি ক্যাবিনেটে।

তবে এবারের এই অর্জন এতো তাৎপর্যময় ছিল যে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পরও রিয়াল মাদ্রিদের উদযাপন দেখে মনে হয়নি তারা আগেও ১৩ বার এই শিরোপা জিতেছে।

রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার কার্লো আনচেলত্তি ম্যাচ শেষে মাঠে নেমে ফুটবলারদের সাথে উদযাপনে মেতে ওঠেন।

ফরাসী ফুটবল বিশেষজ্ঞ হুলিয়েন লরেন্স বিবিসি রেডিও ফাইভ লাইভে বলেন, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এবারে রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ভালো এমন অনেক দল ছিল।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ফুটবলার রিও ফার্দিনান্দ বিটি স্পোর্টসকে বলেছেন, এরা অবিশ্বাস্য এক কাজ করলো। রিয়াল মাদ্রিদ এবার এমন এক মৌসুম কাটাবে কেউ প্রত্যাশাই করেনি। বাধা এসেছে তারা চারিত্রিক দৃঢ়তা ও সংকল্প দিয়ে সেসব বাধা উৎরে গেছে।

রিও ফার্দিনান্দের মতে, তিনি এর আগে কখনোই এতো কঠিনভাবে ফাইনালে কোনো দলকেই আসতে দেখেননি।

আক্ষরিক অর্থেই তাই, ফাইনাল ম্যাচসহ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সেরা তিন দলকে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ শিরোপা জিতলো।

ফাইনালে আসতে রিয়ালকে ১২টি ম্যাচ খেলতে হয়েছে, যার মধ্যে চারটিতেই হেরেছে ক্লাবটি, আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের এই হার লিভারপুলের গোটা মৌসুমেরই মাত্র চতুর্থ হার।

এসব পরিসংখ্যান স্বত্ত্বেও কার্লো আনচেলত্তির ক্লাব এখন ইউরোপের রাজা তা বলতে কোনো দ্বিধাই নেই। এবং এই পথে নাটকীয় সব মুহূর্ত ফুটবল দর্শকদের উপহার দিয়ে এসেছে রিয়াল মাদ্রিদ।

প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের কাছে ২-০ গোলে পিছিয়ে ছিল রিয়াল, ১৭ মিনিটের ব্যবধানে তিন গোল দিয়ে মেসি-নেইমার-এমবাপেকে নিয়ে গড়া দলটিকে ছিটকে দিয়েছে রিয়াল।

শেষ দশ মিনিট পর্যন্ত আগের মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন চেলসির সাথে ৪-৩ গোলে পিছিয়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ, ৮০তম মিনিটে গোল করেন রদ্রিগো, এরপর ৯৬ মিনিটে কারিম বেনজেমা নিশ্চিত করেন রিয়াল মাদ্রিদ বাদ পড়তে আসেনি এখানে।

ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে আরো দুর্দান্ত গল্প, এটাকে সকল ফিরে আসার সেরা ফিরে আসা বলা হচ্ছে।

পেপ গার্দিওলার ম্যান সিটি ৫-৩ গোলে এগিয়ে ছিল, তখন নির্ধারিত সময় শেষ হতে বাকি এক মিনিট, আবারো ব্রাজিলের রদ্রিগো ৯০তম মিনিটেই দুটি গোল করলেন, ৯৫তম মিনিটে ঠান্ডা মাথায় এক পেনাল্টি নিয়ে কারিম বেনজেমা দলকে ফাইনালে তুলে আনলেন।

বেনজেমা ইংলিশ ক্লাবগুলোর বিপক্ষে সাতটি গোল করেছেন এই মৌসুমে।

রিও ফার্দিনান্দ বলেছেন অনেক ক্লাবই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে, কিন্তু রিয়াল এবার সবচেয়ে কঠিন উপায়ে জিতেছে।

রিয়াল মাদ্রিদ ও লিভারপুলের হয়ে খেলা সাবেক ফুটবলার স্টিভ ম্যাকম্যানামান বলেন, রিয়াল মাদ্রিদ সবসময় যা করে এসেছে তাই করলো। ফাইনালে উঠলে রিয়াল মাদ্রিদই জেতে। কিন্তু যে কায়দায় এবার জিতলো এটা সর্বকালের সেরা সাফল্যের একটি।

রিয়াল মাদ্রিদের দলটি দুর্বল কিন্তু তারা ফাইনালে উঠেছে এবং তারা ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছে। এখন বেনজেমা ব্যালন ডি অর না পেলে সেটা হবে হতাশাজনক।

যদিও বেনজেমা ফাইনালে গোল পাননি, কিন্তু তিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের ত্রাণকর্তা ছিলেন গোটা মৌসুম।

৩৪ বছর বয়সী এই ফুটবলারের সেরাটা বের করে এনেছেন কার্লো আনচেলত্তি। ইউরোপিয়ান এই টুর্নামেন্টের মৌসুমে সর্বোচ্চ ১৫টি গোল করেছেন কারিম বেনজেমা। টানা দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিকও করেছেন তিনি।
সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com