বগুড়ায় ধান ও চালের গুদামে দফায় দফায় প্রশাসনের অভিযানের পরেও চালের দাম ক্রেতাদের নাগালে আসেনি। সেই সাথে নতুন করে বেড়েছে আটা, ডিমসহ বেশকিছু পণ্যের দাম। এ অবস্থায় সমাজের নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ বাজারে হিমশিম খাচ্ছেন।
আমনের ভরা মৌসুমে বগুড়াসহ দেশব্যাপী হঠাৎ করে গত আগস্ট মাসে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়ে যায়। এ নিয়ে ক্রেতাসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে বাজার স্বাভাবিক করতে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে খাদ্য বিভাগ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, জেলা মার্কেটিং অধিদফতরসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে জেলা সদরসহ উপজেলা পর্যায়ে বেসরকারি চালের গুদামে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
জেলা প্রশাসনের সূত্র মতে, সদর উপজেলাসহ জেলার শেরপুর, শিবগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার কমপক্ষে ২৫টি চালের গুদামে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে চাল মজুদসহ নানা অপরাধে প্রায় ১৬ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ২৫টির বেশি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু এতে চালের খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা দাম কমেছে।
বগুড়া শহরের মালতিনগর বকসি বাজারের চাল ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম ও ফতেহ আলী বাজারের চাল ব্যবসায়ী নরেন্দ্র নাথ জানান, অভিযানের পর চালের দাম প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা কমেছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের বড় বড় কোম্পানি চালের ব্যবসা করছেন। তারা ধান কাটার শুরুতেই বেশি দামে ধান কিনে চাল তৈরী করে গুদামজাত করছেন। এ কারণে বাজারে হঠাৎ করে দাম বেড়েছে। এসব গুদামে অভিযান চালালে দাম কমবে।
আটার দাম নতুন করে বেড়েছে। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটা ৫৫-৫৮ টাকা দরে বেচা-কেনা হচ্ছে। তবে খাদ্য বিভাগের ডিলারদের মাধ্যমে আটা বিক্রি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এখানে প্রতি কেজি খোলা আটা ১৮ টাকা দরে কিনতে পেরে স্বল্প আয়ের মানুষ কিছুটা সাশ্রয় পেতেন। কিন্তু সেটাও বন্ধ। এছাড়া ডিমের দাম নতুন করে আবারো বেড়েছে। গত ৩-৪ দিন ধরে বগুড়ায় ডিমের দাম প্রতি হালি ৩৪-৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪০-৪৩ টাকায় ঠেকেছে। হঠাৎ করে ডিমের দাম বাড়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না ক্রেতারা। বগুড়ায় কাজী ফার্ম নামের একটি বড় কোম্পানি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এর আগে ৫০ টাকার উপরে দাম উঠলে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট ডিমের খুচরা বাজারে অভিযান পরিচালনা করলে দাম কিছুটা কমে আসে। এ ব্যাপারে ক্রেতারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।