টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রেকর্ড বইয়ে নতুন করে নাম লেখালেন পাকিস্তানের বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ান জুটি। গতরাতে নিজ মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের ছুঁড়ে দেয়া ২০০ রানের টার্গেট উদ্বোধনী জুটিতেই স্পর্শ করেছেন বাবর-রিজওয়ান। ১৯ দশমিক ৩ ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ২০৩ রান করেন তারা। বাবর ১১০ ও রিজওয়ান ৮৮ রানে অপরাজিত থেকে টি-টোয়েন্টিতে নতুন ইতিহাস লিখেছেন। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে ১০ উইকেটে জয়ের বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন বাবর-রিজওয়ান।
অবশ্য এক্ষেত্রে নিজেদের রেকর্ডই ভেঙ্গেছেন বাবর-রিজওয়ান। এর আগে ২০১৬ সালে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬৯ রানের টার্গেট বিনা উইকেটে স্পর্শ করেছিলেন তারা।
আরো এক দিক দিয়ে নিজেদের রেকর্ড নিজেরাই ভেঙ্গেছেন বাবর-রিজওয়ান। রান চেজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় জুটির রেকর্ড গড়েছেন তারা। আগের রেকর্ডটিও তাদেরই ছিলো। ২০২১ সালে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিততে ২০৪ রানের টার্গেট পেয়েছিলো পাকিস্তান। ওই ম্যাচে উদ্বোধনী জুটিতে ১৯৭ রান করেছিলেন বাবর-রিজওয়ান। ৯ উইকেটে জয় পাওয়া ম্যাচে পাকিস্তানের হয়ে ১২২ রান করেছিলেন বাবর।
টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রান চেজ করার রেকর্ড গড়লো পাকিস্তান। এতে ভারতের রেকর্ড ভাঙ্গলো পাকিস্তান। ২০১৮ সালে ব্রিস্টলে ইংল্যান্ডের দেয়া ১৯৯ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে ভারত। ম্যাচে ৫৬ বলে অপরাজিত ১০০ রান করেন রোহিত শর্মা।
এই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে ১০ উইকেটে হারলো ইংল্যান্ড। আর দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টিতে ১০ উইকেটে জিতলো পাকিস্তান। গত বিশ্বকাপে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিলো পাকিস্তান। সেটিই ছিলো পাকদের প্রথম ১০ উইকেটে জয়।
টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের পক্ষে প্রথমবারের মতো ২০০ রানের জুটি গড়েছেন বাবর-রিজওয়ান। দু’জনে এই নিয়ে পঞ্চমবারের মত দেড় শ’ বা ততোধিক রানের জুটি গড়েছেন। টি-টোয়েন্টিতে এটিই সবচেয়ে বেশিবার দেড় শ’ রানের জুটি গড়ার নজির।
এখন পর্যন্ত তিনবার ২ শ’ বা তার বেশি রান চেজ করে ম্যাচ জিতেছে পাকিস্তান। এই তিনবারই উদ্বোধনী জুটিতে দেড় শ’ বা তার বেশি রান করেছেন বাবর-রিজওয়ান। এরমধ্যে একটি গতরাতে। অন্য দু’টি ২০২১ সালে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০৮ রানের ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০৪ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ম্যাচ জিতেছিল পাকিস্তান।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন বাবর। পাকিস্তানের কোনো ব্যাটার হিসেবে এই ফরম্যাটে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাবর। এ ছাড়া পাকিস্তানের পক্ষে ১টি করে সেঞ্চুরি আছে আহমেদ শেহজাদ ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ভারতের রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলি-লোকেশ রাহুলকে টপকে গেছেন বাবর। টি-টোয়েন্টিতে (আন্তর্জাতিক, ঘরোয়াসহ) এটি ছিলো বাবরের সপ্তম সেঞ্চুরি। ছয়টি করে সেঞ্চুরি আছে রোহিত-কোহলি-রাহুলের। তাই এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরিতে এখন সবার উপরে বাবর।
টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইলের। ২২ বার সেঞ্চুরি করেছেন এই ইউনিভার্স বস খ্যাত গেইল।
টি-টোয়েন্টিতে জুটিতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড দখলে নিয়েছেন বাবর-রিজওয়ান। ফলে পেছনে পড়ে গেছে ভারতের রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের রেকর্ড। জুটিতে রোহিত-ধাওয়ান রান ১৭৪৩। আর এখন বাবর-রিজওয়ান রান ১৯২৯।
জুটিতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডও বাবর-রিজওয়ানের দখলে। সাতবার সেঞ্চুরির জুটি গড়েছেন তারা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার জুটিতে সেঞ্চুরি করেছেন রোহিত ও রাহুলের।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে একই ভেন্যুতে সেঞ্চুরির ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ ডু-প্লেসিস ও অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারের পাশে বসেছেন বাবর। করাচির ভেন্যুতে টেস্টে দু’টি ও ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টিতে ১টি করে মোট চারটি সেঞ্চুরি রয়েছে বাবরের। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারর্সে টেস্ট-ওয়ানডেতে ২টি করে ও টি-টোয়েন্টিতে ১টি সেঞ্চুরি রয়েছে ডু-প্লেসিসের। আর অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ওভালে ৪টি টেস্ট, ২টি ওয়ানডে ও ১টি টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি রয়েছে ওয়ার্নারের।
সূত্র : বাসস