পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী একে স্কুল চৌরাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মায়ের দোয়া বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছে। আহতদের আমতলী উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, এই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একমাত্র ছোট্ট মমতা জানে না তার পরিবারের অন্য তিনজন বেচে নেই। শুধুই কাকুতি করছে আমাকে মায়ের কাছে নিয়ে যাও। ঘটনা ঘটেছে শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা মায়ের দোয়া পরিবহন বাসটি (পটুয়াখালী-জ-১১-০০১০) পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী একে স্কুলের স্পিড ব্রেকারের কাছে এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। পরে বাসটি একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। এরপরে বাসটির চালক গাড়ী চলন্ত অবস্থায়ই নেমে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় বাসটি প্রথমে দুইটি অটোরিক্সাকে চাপা দেয়। বাসের চাপায় দুইটি অটো দুমড়ে-মুড়চে যায়। এরপরে বাসটি সামনে চলতে থাকে। দ্রুত গতিতে চালকহীন বাসটি সাত জন পথচারীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে একই পরিবারের তিনজন মা নুপুর বেগম (৩০), ছেলে নিশাত (১০) ও বড় বোনের মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী লামিয়া (১৫) নিহত হয়। নিহত নুপুরের ছোট মেয়ে মমতা (৬), শাহাবুদ্দিন (৫৬) ও গ্রাম্য চিকিৎসক জব্বার (৪০) আহত হয়। আহতদের মধ্যে জব্বারকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
একই পরিবারের তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় আমতলীতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খবর পেয়ে সার্কেল এএসপি সৈয়দ রবিউল ইসলাম ও আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরণ করেছে। ঘাতক বাসটি আটক করেছে পুলিশ।
একই পরিবারের নিহত তিন জনের বাড়ী আমতলী উপজেলার দক্ষিণ রাওগা গ্রামে। নিহত নুপুরের স্বামী আবুল হোসেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী।
নিহত নুপুরের খালা বেবি আক্তার বলেন, নুপুর তার ছেলে নিশাত, মেয়ে মমতা ও বড় বোনের মেয়ে লামিয়াকে নিয়ে শুক্রবার গাজীপুর বন্দরের এক আত্মীয় বাড়ী বেড়াতে গিয়েছিল। ওই বাড়ী থেকে শনিবার সকালে মাহেন্দ্র গাড়ীতে আমতলী এসে স্কুলে নেমে বাসায় যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বাসের চাপায় নিহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. এনায়েত করিম, আবদুর রহিম দোলন ও আশ্রাব আলী বলেন, চালকহীন বাসটি দ্রুতগতির একটি মাইক্রোবাস, দুইটি অটো ও ৬-৭ জন পথচারীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিন জন নিহত হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক বাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। একই পরিবারের তিনজনের ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।