যুক্তরাজ্যের স্থানীয় বাসিন্দাদের (নেটিভ) তুলনায় তিনগুণ বেশি দরিদ্র ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি দরিদ্রতার মধ্য দিয়ে জীবন কাটায় কালো ও অ্যাথনিক (নৃতাত্ত্বিক) কমিউনিটির মানুষেরা। সম্প্রতি পরিচালিত এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
যুক্তরাজ্যে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ও কোন কমিউনিটির মানুষ বেশি দরিদ্র তা নিয়ে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। এতে বলা হয়, নেটিভদের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি দরিদ্র বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশরা। এ ছাড়া অন্যান্য অ্যাথনিক কমিউনিটির তুলনায়ও ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে দরিদ্রতার হার বেশি। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা আরও বলা হয়েছে- কালো এবং জাতিগতভাবে নন-নেটিভ মানুষেরা নেটিভ ইংরেজদের তুলনায় দুই গুণ বেশি দরিদ্রতার মধ্যে জীবন কাটান। যুক্তরাজ্যে নেটিভ ইংরেজদের তুলনায় কালো এবং জাতিগতভাবে নন-নেটিভ মানুষকে জীবনযাপনের ক্ষেত্রে বেশি কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। বর্তমান সময়ে এসব কমিউনিটির মানুষের লড়াই অনেক বেশি বেড়েছে।
সাধারণত একটি পরিবারের আয় যদি রিলেটিভ প্রভার্টি লাইনের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম হয়, তখন সেই পরিবারকে চরম দারিদ্র্যতাগ্রস্ত হিসেবে ধরা হয়। এদিকে গবেষণা প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, জাতিগত সংখ্যালঘু ও ব্ল্যাক নাগরিকরা যুক্তরাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ হলেও তারা ব্রিটেনের ২৬ শতাংশ চরম দারিদ্র্যতার জন্য দায়ী। অর্থাৎ সংখ্যার তুলনায় বেশি দারিদ্র্যগ্রস্ত এসব মানুষ।
গত এক দশকে যুক্তরাজ্যে জাতিগত সংখ্যালঘু পরিবারগুলোর সোশ্যাল সিকিউরিটি বছরে গড়ে ৮০৬ পাউন্ড কমলেও সাদা পরিবারগুলোর ক্ষেত্রে কমেছে মাত্র ৪৫৪ পাউন্ড। এতে স্পষ্ট যে, জাতিগত সংখ্যালঘুরা এখানে বৈষম্যের শিকার। এ ছাড়া ক্রমবর্ধমান গ্যাস ও বিদ্যুতের বিল সংকটে সরকারিভাবে শ্বেতাঙ্গ পরিবারগুলো ৫৩ শতাংশ মূল্যছাড় বা সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও কালো এবং সংখ্যালঘু জাতিগত সম্প্রদায়ের ফ্যামিলিগুলো মাত্র ৩৫ শতাংশ মূল্যছাড় পাবে। ২০১৯ সালে সোশ্যাল মেট্রিক্স কমিশন অনুমান করে যে, ব্রিটেনে ৪৫ লাখ মানুষ দারিদ্র্যতায় নিমজ্জিত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রিলেটিভ প্রভার্টি লেভেল একই মাত্রায় থেকেও দরিদ্র মানুষ বেড়েছে।