নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী। গত ৮ অক্টোবর শনিবার ব্রঙ্কসের বাংলাবাজার জামে মসজিদে ব্রঙ্কস ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এ মাহফিল। বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর পূণ্যময় জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা, গ্র্যান্ড র্যালি, দোয়া, মিলাদ মাহফিল এবং তবারক বিতরণের মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান হয়।
উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়ার সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাফিজ মাওলানা ওয়াহি আহমেদ চৌধুরীর পরিচালনায় মাহফিলে নবীজী (সা:) এর জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার প্রফেসর ড. শেখ উসেম চেটিলা, মুফতি মাওলানা মইনুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত ও নাত পেশ করা হয়।
এদিন বাদ আসর বঙ্কসের বাংলাবাজার জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লীর অংশ গ্রহণে একটি বিশাল র্যালি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাদ মাগরিব মসজিদে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সাঃ)-এর আলোচনা শুরু হয়। র্যালিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্কচেষ্টার জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবায়ের রশীদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মদ এমদাদুল হক প্রমুখ। ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা মহানবী (সঃ)-এর বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক ও আদর্শের উপর আলোকপাত করে বলেন, রাসূল (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। মহান আল্লাহ বিশ্বজগতের শান্তির দূত হিসেবে সমগ্র বিশ্ববাসীর রহমত স্বরূপ প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেন। তিনি প্রচার করেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। তাঁর আগমনের এই স্মৃতিকে ধারণ করে প্রতি বছর আমরা পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপন করি।
তারা বলেন, বিশ্ববাসীকে মুক্তি ও শান্তির পথে আহ্বান জানান মহানবী (সঃ)। প্রতিষ্ঠা করেন মানুষের মর্যাদা ও অধিকার। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে অন্য ধর্মাবলম্বী অনেকেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মানব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। মহানবীর (সঃ)-এর আদর্শ আজকের বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। মহানবীর আদর্শ অনুসরনের মাধ্যমে ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরেই শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর জীবন চরিতের আলোকে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা মহানবীর (সঃ) আদর্শ অনুসরনের আহবান জানিয়ে বলেন, ইসলামের সৌন্দর্যকে নিজের জীবনে ধারণ করতে হবে। তারা বলেন, এক শ্রেণীর জ্ঞানপাপী সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল (সা.) কে সাধারণ মানুষের সাথে তুলনা করেন। অথচ রাসূল (সা.) সাধারণ মানুষ মনে করলে ঈমানই থাকবে না। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব নবীর আদর্শ অনুসরনের কোন বিকল্প নেই। যারা ইসলামের কথা বলে ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে ধর্মের বদনাম করছে, তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
মাহফিলে মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্ব মানবতার শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া-মুনাজাত পরিচালনা করেন।
উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়া এবং সদস্য সচিব হাফিজ মাওলানা ওয়াহি আহমেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য সকলকে বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।