ক্যাম্প ন্যু’তে রোববার রাতে লা লিগার ম্যাচে অ্যাথলেটিক বিলবাওর বিপক্ষে ৪-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। বার্সার হয়ে গোলগুলো করেন ওসমান ডেম্বেলে, রবার্ট লেভানডফস্কি, সার্জিও রবের্তো ও ফেরান তোরেস। একটি গোল ও হ্যাটট্রিক অ্যাসিস্ট করে চারটি গোলেই নিজের নাম জড়িয়ে রাখেন ওসমান ডেম্বেলে।
এমন দাপুটে জয়ের রাতে বার্সেলোনার জন্য অস্বস্তির কাঁটা হয়ে এসেছে গাভি ও রবের্তোর চোট। প্রথমার্ধে অশ্রুসিক্ত চোখে মাঠ ছাড়েন গাভি আর ম্যাচের শেষ দিকে স্ট্রেচারে করে বাইরে নেয়া হয় রবের্তোকে।
শুরু থেকে বিলবাওকে চেপে ধরা বার্সেলোনা ম্যাচের ১২তম মিনিটেই প্রথম এগিয়ে যায়। প্রথমে বক্সের বাইরে থেকে ওসমান ডেম্বেলের বাঁ পায়ের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান বিলবাও গোলরক্ষক উনাই সিমোন। আলগা বল পেয়ে বাঁ দিক থেকে লেভানডফস্কি ক্রস বাড়ান বক্সে, হেডে বিলবাওর জালে বল পাঠান এই ফরাসি ফরোয়ার্ড।
লা লিগায় ঘরের মাঠে বার্সেলোনার ৪ হাজারতম গোল এটি।
১৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সার্জিও রবের্তো। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে ডেম্বেলেকে বল বাড়িয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। সতীর্থের ফিরতি বল পেয়ে স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের শট প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার ইনিগো মার্তিনেজের পায়ে লেগে বল জালে জড়ায়।
তিন মিনিট পরই স্কোরলাইন ৩-০ করেন লেভানডফস্কি। ডান দিক দিয়ে এগিয়ে ডেম্বেলে পাস দেন বক্সে, আর বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ পায়ের শটে সফরকারীদের জালে বল পাঠান আগের ম্যাচে জোড়া গোল করা এই পোলিশ তারকা।
আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার গোল হলো ১১ ম্যাচে ১২টি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সেলোনার হয়ে তার ১৭ গোল হয়ে গেল ১৫ ম্যাচে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বার্সেলোনার গোলপোস্ট লক্ষ্য করে নিজেদের প্রথম শট নিতে পারে বিলবাও। তবে আলেক্স বেরেনগের নিচু শট ঠেকাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনকে। ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে ব্যবধান আরো বাড়তে পারত। ডান দিক থেকে রবের্তো নিচু ক্রস বাড়ান দূরের পোস্টে পেদ্রির উদ্দেশে। বিলবাওয়ের দানি গার্সিয়ার ক্লিয়ারের চেষ্টায় বল বার্সেলোনা মিডফিল্ডারের পায়ে লেগে পোস্টে প্রতিহত হয়।
ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে চতুর্থ গোল পেয়ে যায় বার্সেলোনা। ডেম্বেলের পাস ডি-বক্সে পেয়ে ডান পায়ের জোরাল শটে গোলরক্ষক সিমোনকে পরাস্ত করেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড ফেরান তোরেস।
এর একটু পরই ডেম্বেলেকে তুলে নেন বার্সা কোচ জাভি। কাঁধে আঘাত পেয়ে ৮৬তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন রবের্তো। আগেই পাঁচ জন বদলি নামানোয় বাকি সময়ে একজন কম নিয়ে খেলতে হয় বার্সেলোনাকে।
নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে বিলবাওকে গোল প্রায় উপহার দিতে বসেছিলেন টের স্টেগেন। তবে সফরকারীদের পরপর দুটি শট গোললাইন থেকে ফেরান সার্জিও বুস্কেটস ও এরিক গার্সিয়া। এক হালি গোলের ব্যবধানে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জাভির শিষ্যরা।
১১ ম্যাচে ৯ জয় ও এক ড্রয়ে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে তাদের চেয়ে ৩ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষে শিরোপাধারী রিয়াল মাদ্রিদ।
ক্যাম্প ন্যু’য়েই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগামী বুধবার বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা। টানা দ্বিতীয় মৌসুমে প্রতিযোগিতাটির গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের দুয়ারে চলে যাওয়া কাতালান দলটির নকআউটে যেতে বাকি দুই ম্যাচ শুধু জিতলেই হবে না, পক্ষে আসতে হবে অন্য ম্যাচগুলোর ফল।