রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন

বিধ্বংসী তাসকিনে বাংলাদেশের শুভসূচনা

স্পোর্টস ডেস্ক ‍॥
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২
  • ১০০ বার

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ৯ রানে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশ। যেখানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে টাইগারদের ম্যাচ জেতান তাসকিন আহমেদ।

ব্যাট হাতে শুভ সূচনার পর পথ হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।  একের পর এক উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৪ রান করতে পারল বাংলাদেশ।

বল হাতেও দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশ।  ফিল্ডিংও করেছে অসাধারণ।

তাসকিন-হাসানে ধরাশায়ী হয়ে ১৩৫ রানে গুটিয়ে গেছে নেদারল্যান্ডস।

ফলে বিশ্বকাপ মিশনে নেমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৯ রানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

হোবার্টের বেলেরিভ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৫ রানের টার্গেট ছুড়ে টাইগাররা।

সে লক্ষ্যের তাড়ায় একমাত্র কলিন একারম্যান ছাড়া আর কেউ বাংলাদেশি বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি।

বোলিংয়ের শুরুতে প্রথম ওভারেই পর পর দুই বলে নেদারল্যান্ডসের ২ উইকেট শিকার করেন তাসকিন।

এর পর সাকিবের ওভারে দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে দুটি রানআউট উপহার পায় টাইগাররা।

পাওয়ার প্লেতে ৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে নেদারল্যান্ডস করতে পারে কেবল ৩২ রান।

চতুর্থ ওভারে আক্রমণে আসা সাকিবকে ছক্কা হাঁকান ডাচ ওপেনার ও’ডাউড।

পরের বলটি মিডউইকেটে ঠেলে দুটি রান নিতে গিয়েই ধরা খেলেন ও’ডাউড। দৌড়ে ক্রিজের মাঝখানে চলে আসেন তিনি কিন্তু তাকে ফিরিয়ে দেন কলিন একারম্যান।

এর মাঝে দারুণ ক্ষিপ্রতায় বাউন্ডারি লাইন থেকে ছুটে এসে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থ্রো করেন আফিফ হোসেন। বল ধরে স্টাম্প ভেঙে উল্লাসে মাতেন সাকিব।

১ ছক্কায় ৮ বলে ৮ রান করে ফেরেন ও’ডাউড। এক বল পর রান আউট হন কুপার। তিন রান নেওয়ার চেষ্টায় ফেরেন তিনি ‘ডায়মন্ড ডাকের’ তেতো স্বাদ নিয়ে।

সাকিবের বলটি কাভারে পাঠান একারম্যান। বলের পিছু ছুটেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাউন্ডারি থামিয়ে স্ট্রাইক প্রান্তে বল থ্রো করেন তিনি। তাতে বিদায় কুপারের।

১৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়া নেদারল্যান্ডসের হয়ে প্রতিরোধ গড়েন একারম্যান ও স্কট এডওয়ার্ডস।  জমে যাওয়া এই জুটি ভাঙলেন সাকিব।

১২তম ওভারে সাকিবের ডেলিভারিটি রিভার্স সুইপ করেন এডওয়ার্ডস।  সরাসরি চলে যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে থাকা হাসান মাহমুদের কাছে।  ক্যাচ নিতে ভুল করেননি তিনি।  ১ চারে ২৪ বলে ১৬ রান দিয়ে বিদায় নেন নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক।

১২ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ডাচদের রান ৬৬।  এ সময়েও খেলার মধ্যেই ছিল দুই দলই।  কারণ জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ছিল ৪৮ বলে ৭৯ রান।  ক্রিজে ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন একারম্যান।

পরের ওভারেই ৪র্থ বলে টিম প্রিঙ্গেলর স্টাম্প ভেঙে দিলেন হাসান মাহমুদ।  ৬ বল খেলে প্রিঙ্গল করেন ১ রান।

এরপরও ডাচ সমর্থকদের মাঝে আশা জাগিয়ে রাখেন একারম্যান।

মোসাদ্দেক হোসেনের ওভারে ছক্কা হাঁকানোর পর ওই ওভারে ৩৯ বলে ফিফটি স্পর্শ করলেন এই ব্যাটার।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার পঞ্চাশের স্বাদ পেলেন তিনি।

উইকেটের আশায় পরের ওভার করতে হাসানের মাহমুদের হাতে বল তুলে দিলেন সাকিব।  নিজের শেষ ওভারে সফল হলেন এ তরুণ পেসার।  এ পেসারের বাউন্সারে পুল করেন ফন বিক লোগান ফন বিক।  সীমানায় ক্যাচ লুফে নেন আরেক পেসার তাসকিন।  ৫ বলে ফন বিক করেন ২।

১৫ ওভার শেষে নেদারল্যান্ডসের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৮৬ রান।  তবুও জয়ের আশায় মাঠে তাকিয়ে থাকেন গ্যালারির ডাচ সমর্থকরা।  কারণ ক্রিজে রয়েছেন কলিন একারম্যান।

তবে তাসকিনের ফের জোড়া আঘাতে সেই আশায় গুঁড়ে বালি।

১৭৩ম ওভারে এসে তাসকিন সাজঘরে ফিরিয়ে দিলেন দলের একমাত্র ভরসা একারম্যানকে।  তার আগে দ্বিতীয় বলে থার্ডম্যানে শারিজ আহমাদকে হাসান মাহমুদের ক্যাচে পরিণত করেন তাসকিন।

পঞ্চম বলে ফিরিয়ে দেন এক প্রান্ত আগলে রাখা কলিন আকারম্যানকেও। পুল করে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন তিনি। ৪৮ বলে দুই ছক্কা ও ছয় চারে ৬২ রান করেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।

১৭ ওভারে নেদারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১০৫ রান।  অর্থাৎ শেষ ৩ ওভারে ডাচদের প্রয়োজন ১৮ বলে ৪০ রান।

এ সময় উইকেটের আশায় অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকারের হাতে বল তুলে দিলেন সাকিব। উইকেট না পেলেও ৮ রান দিলেন সৌম্য। ফলে জয়ের জন্য ১২ বলে প্রয়োজন পড়ে ৩২ রানের।

১৯তম ওভারটি করতে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান।  পর পর দুটি ওয়াইডসহ ৭ রান দেন মোস্তাফিজ।

অর্থাৎ ৬ বলে ২৫ রান দরকার পড়ে নেদারল্যান্ডসের।  সেই রান ঠেকাতে দায়িত্ব পড়ে সৌম্য সরকারের কাঁধে। কারণ তাসকিন, হাসান ও সাকিব যার যার কোটা পূরণ করে ফেলেছেন।

সাকিবের আস্থার প্রতিদান দেন সৌম্য।  ৪র্থ বলে দুর্দান্ত এক ছক্কা হাঁকালেন ভ্যান মেকারেন।  ২ বলে দরকার ১২ রানের।

সে বলে ২ রান নেন মেকারেন।  তাতেই উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে গ্যালারির বাংলাদেশি সমর্থকদের মধ্যে।  শেষ বলে ছক্কার আশায় উড়িয়ে মারেন মেকারেন।  কিন্তু বাউন্ডারিতে লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন তিনি।  ১৩৫ রানে থামল ডাচরা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com