বিশ্বকাপের আগে উড়তে থাকা ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে এসে হঠাৎ অচেনা রূপে। বিধ্বংসী ব্যাটিং অর্ডারের বিখ্যাত থ্রি লায়ন্সরা হঠাৎ যেন হারিয়েছে তাদের তেজস্বীয়তা। আগের ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে ছোট লক্ষ্যেও কেঁপে উঠে তারা, যদিও লিয়াম লিভিংস্টোনের ব্যাটে শেষমেষ জয়ের বন্দরে পা রাখে ইংল্যান্ড। তবে আজ আর জয় পাওয়া হয়নি, শুরুতে আইরিশ বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আর পরে বৃষ্টি বাঁধায় ৫ রানে হার মেনে নিতে হয় টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট ইংল্যান্ডকে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচের মতো আজো ফের আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেই একই রূপে ইংল্যান্ড। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ করার আগেই জশুয়া লিটিলের শিকার ইংলিশ অধিনায়ক জশ বাটলার। দলীয় ১৪ রানে লিটিলের দ্বিতীয় শিকার এলেক্স হেলস। আর দলীয় ২৯ রানে বেন স্টোকস ফিরেন ব্যক্তিগত ৬ রানে।
আগের দিন পাওয়ার প্লেতে কোনো চার-ছক্কা মারতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। আর আজ ইংল্যান্ড তাদের পাওয়ার প্লেতে চার-ছক্কা মেরেছে মোটে একটি। পাওয়ার প্লেতে আসে ৩ উইকেটে মাত্র ৩৭ রান। তবে ডেভিড মালান আর হ্যারি ব্রকের ৩৮ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরার আভাস দেয় ইংল্যান্ড।
হ্যারি ব্রক ২১ বলে ১৮ আর ডেভিড মালান ৩৭ বলে ৩৫ রান করে ফিরলে ১৩.১ ওভারে ৮৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। সেখান থেকে মইন আলি স্বপ্ন দেখালেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। নির্ধারিত সময়ে বৃষ্টির বাধা কাটিয়ে মাঠে নামতে না পারায় বৃষ্টি আইনে ৫ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয় আয়ারল্যান্ডকে। ১২ বলে ২৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন মইন আলি।
এর আগে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টসে জিতে আয়ারল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংলিশ অধিনায়ক জশ বাটলার। পল স্টার্লিংকে দ্রুত ফেরত পাঠালেও বালবার্নির নেতৃত্বে আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় উইকেট জুটি যেন ইংল্যান্ডের বোলিং লাইনআপকে চ্যালেঞ্জ করে বসে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আইরিশদের সংগ্রহ ৮২ রান। অধিনায়ক এন্ড্রু বালবির্নির সম্মুখ থেকে সাহসী নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৭ রানের সংগ্রহ পায় আয়ারল্যান্ড। বালবার্নি খেলেন ৪৭ বলে ৬২ রানের ইনিংস। পল স্টার্লিংকে মার্ক উড ফেরান ৮ বলে ১৪ রানে।
১২তম ওভারে দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙে রান আউট হয়ে লরকান টাকারের বিদায়ে। ২৭ বলে ৩৪ রান করেন তিনি। তবে ততক্ষণে দলীয় রান ১০০ ছুঁয়ে ফেলেছে। তবে দুই বল পরেই হ্যারি টেক্টর ০ রানে ফিরে যাওয়ায় ম্যাচে ফিরে ইংল্যান্ড। কার্টিস ক্যাম্ফারকে নিয়ে ১৯ বলে ২৯ রানের জুটি গড়ে যখন মনে হচ্ছিলো পা ফসকালেও পথ হারায়নি আয়ারল্যান্ড, তখনই বালবির্নি ফেরেন লিভিংস্টোনের প্রথম শিকার হয়ে।
পরের বলেই জর্জে ডকরেলকে শূন্য ফিরিয়ে দিয়ে হ্যাট্রিকের আশা জাগিয়ে ব্যর্থ হলেও লিভিংস্টোনেই ইংল্যান্ড ম্যাচে ফিরে আসে। এদিকে মার্ক উড ১১ বলে ১৮ করা কার্টিস ক্যাম্ফারকেও ফেরান নিজের তৃতীয় শিকার হিসেবে। লিভিংস্টোনের তৃতীয় শিকার মার্ক আদাইর। ফলে ১ উইকেটে ১২ ওভার পর্যন্ত পৌঁছালেও অবিশ্বাস্যভাবে পুরো ২০ ওভার খেলতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। থেমে যেতে হয়েছে ৪ বল আগেই। শেষ ৭ রানেই ৩ উইকেট হারায় তারা। যার দুটো স্যাক কুরান। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন লিভিংস্টোন ও মার্ক উড।