বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নিরবের পরকীয়ার অভিযোগ নিয়ে সুর পাল্টালেন স্ত্রী ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে কী কথা হলো, জানালেন মির্জা ফখরুল ভারত থেকে চিন্ময়ের মুক্তি দাবি কিসের আলামত, প্রশ্ন রিজভীর আইনজীবী হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার ৬ : প্রেস উইং চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ রয়টার্সের মনগড়া সংবাদের প্রতিবাদ জানালো সিএমপি হাইকোর্টের নজরে ইসকন-চট্টগ্রামের ঘটনা : আদালতকে পদক্ষেপ জানাবে সরকার ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান

বিদেশী ঋণ পরিশোধের চাপ ছাড়ের ধারায়ও পতন

বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২
  • ৯১ বার

-মূল ঋণের অর্ধেক সুদ পরিশোধ
-দায় পরিশোধের পরিমাণও কমেছে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার ও জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় বিদেশী ঋণের দায় পরিশোধের চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। প্রতিশ্রুতি বাড়লেও দাতাদের অর্থ ছাড় কমে গেছে। গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তুলনায় চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে ছাড় কমেছে ৫৮ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। তবে কমেছে ঋণের অর্থ পরিশোধের পরিমাণ। আর মূল টাকার প্রায় অর্ধেকের সমপরিমাণ দিতে হচ্ছে সুদ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ তথ্য থেকে এসব জানা গেছে। সঙ্কটকালে বৈদেশিক উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড়ের ধারা আগের চেয়ে কমেছে। অন্য দিকে প্রতিশ্রুত অর্থ পাওয়ার পাশাপাশি ঋণ পরিশোধের চাপে আছে বলে ইআরডি সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

ইআরডির হালনাগাদ তথ্য থেকে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কমেছে বৈদেশিক ঋণের অর্থ ছাড়। প্রথম তিন মাসে ১৩৪ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার ডলার ছাড় করেছে উন্নয়ন সহযোগীরা, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে ছাড় হয়েছিল ১৯৩ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে অর্থছাড় কমেছে প্রায় ৫৯ কোটি ডলার। এ দিকে ঋণ পরিশোধেই প্রথম প্রান্তিকে ব্যয় হয়েছে ৫২ কোটি ৫৬ লাখ ১০ হাজার ডলার, যা মোট ঋণের প্রায় ৩৯ শতাংশ। সুদ দিতে হয়েছে ১৩ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং মূলধন খাতে ৩৮ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার। যদিও প্রথম প্রান্তিকে বেড়েছে নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ৪০ কোটি ৫৪ লাখ ডলার, যার বেশির ভাগই প্রকল্প ঋণ। এখন খাদ্য খাতে সহায়তা পাওয়া যায়নি। ৩০ কোটি দুই লাখ ডলার হলো ঋণ এবং ১০ কোটি ৫২ লাখ ডলার হলো অনুদান। গত অর্থবছর একই সময়ে মাত্র ৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার প্রতিশ্রুতি দেয় দাতারা। মাত্র ৪০ কোটি ৫৪ লাখ ডলার ঋণের চুক্তি হয়েছে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে। যদিও গত বছরের প্রথম তিন মাসে মাত্র ৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের নতুন প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল।

এ দিকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ঋণ ও অনুদান মিলে ৯৩ হাজার কোটি টাকা বা প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রতি মাসে ৮৩ কোটি ডলার করে ছাড় হতে হবে। সে অনুযায়ী দুই মাসে কমপক্ষে ২৪৯ কোটি ডলার অর্থছাড়ের কথা ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থছাড় বেশ পিছিয়ে আছে।

এ সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় হয়েছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে। তাদের কাছ থেকে এসেছে ৪৫ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থছাড় চীনের কাছ থেকে, ২৭ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে এসেছে (আইডিএ) ১৯ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এডিবির কাছ থেকে এসেছে ১৬ কোটি ৭৯ লাখ ৮০ হাজর ডলার। ভারত থেকে ছাড় ১০ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার। রাশিয়া মাত্র ৭ কোটি ৪৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার ছাড় করেছে গত তিন মাসে। এগুলোর সবই প্রকল্পের বিপরীতে।

প্রসঙ্গত, এর আগের অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলারের অর্থছাড় করে উন্নয়ন সহযোগীরা। বিদেশী অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে এসেছে এক হাজার কোটি ৮৩ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২৬ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করে এডিবি। এরপর রয়েছে জাপান ও বিশ্বব্যাংক। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছর উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশ ৭৯৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার অর্থছাড় করে। ২০২০-২১ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৭১০ কোটি (৭.১ বিলিয়ন) ডলার ঋণসহায়তা পাওয়া গিয়েছিল। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিদেশী ঋণ আসে। ওই বছর ৭৩৮ কোটি (৭.৩৮ বিলিয়ন) ডলার ঋণ পাওয়া গিয়েছিল।

ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের প্রথম দিকে সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ ব্যয় কম হয়। বেশ কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দের ১ শতাংশের কম অর্থ ব্যয় করেছে। বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দের কোনো অর্থ ব্যয় করতে পারেনি। তবে অর্থবছরের শেষ দিকে অর্থ ব্যয় বাড়বে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুরের সাথে বিদেশী ঋণপ্রাপ্তি ও ছাড়ের ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, গত কয়েক অর্থবছরে বাজেট সহায়তা ও কোভিড সহায়তা অর্থছাড়ে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চলতি অর্থবছরেও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তার জন্য আলোচনা চলছে। তবে উন্নয়ন সহযোগীদের শর্ত মেনে বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কার না করা হলে বাজেট সহায়তা পাওয়া কঠিন হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com