মৌসুমে প্রথম হারের ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই আবারো হোঁচট খেলো রিয়াল মাদ্রিদ। জিরোনার বিপক্ষে ফের পয়েন্ট হারাল চ্যাম্পিয়নরা। লা লিগার ম্যাচে জিরোনার বিপক্ষে অনেক কষ্টে এগিয়ে গিয়েও ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি কার্লো আনচেলত্তির দল। লিগ টেবিলের শীর্ষে ফিরলেও বার্সেলোনার সাথে প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবধান বাড়াতে পারেনি চ্যাম্পিয়নরা।
নিজেদের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যু’তে রোববার লা লিগার ম্যাচে জিরোনার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ভিনিয়ুউস জুনিয়র রিয়ালকে এগিয়ে নেয়ার পর জিরোনাকে সমতায় ফেরান ক্রিস্তিয়ান স্তুয়ানি।
শেষ দিকে টনি ক্রুস লাল কার্ড দেখায় কিছুটা সময় একজন কম নিয়ে খেলতে হয় রিয়ালকে।
শক্তির বিচারে দুই দলের মাঝে আকাশ-পাতাল পার্থক্য হলেও রিয়ালকে সামনে পেলেই যেন জ্বলে ওঠে জিরোনা। লা লিগায় আগের চারবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে দুটিতে হেরেছিল মাদ্রিদের দলটি, সর্বশেষটি ঘরের মাঠে, ২০১৮-১৯ মৌসুমে।
ম্যাচ শুরু হতেই আক্রমণে উঠে রিয়াল, দারুণ পজিশনে বল পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন লুকা মদ্রিচ। দশম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে রদ্রিগোর শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান জিরোনা গোলরক্ষক।
১৯ মিনিটে রিয়ালের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় সফরকারীরা। ডান দিক থেকে আসা সতীর্থের ক্রসে ভালেরি ফার্নান্দেজের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় রিয়াল। চার মিনিট পর রদ্রিগোর শট পোস্টে প্রতিহত হলে গোল পায়নি স্বাগতিকেরা।
৩৮ মিনিটে এবার দুর্ভাগ্য পোস্ট বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় জিরোনার সামনে। জিরোনার মিডফিল্ডার এররেরার বুলেট গতির শট থিবো কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিলেও ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে আসে। গোলশূন্য সমতায় প্রথমার্ধ শেষ করে দু’দল।
বিরতির পর অনেকটা সময় ধারহীন এলোমেলো ফুটবলের পর ৭০ মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। ডান দিক থেকে গোলমুখে বল বাড়ান ফেডে ভালভার্দে আর দারুণ স্লাইডে সেই বল সফরকারীদের জালে পাঠান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
দুই মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুন করতে পারতো স্বাগতিকরা। রদ্রিগোর ছোট পাস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে মার্কো আসেনসিওর নেয়া বুলেট গতির শট অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় হাত বাড়িয়ে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান জিরোনা গোলরক্ষক পাওলো দিনো।
৭৭ মিনিটে রিয়ালের ডি-বক্সে আসেনসিওর হাতে বল লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। নিখুঁত শটে সমতা টানেন উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড ক্রিস্তিয়ান স্তুয়ানি।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও হতাশ করেন রদ্রিগো। মারিয়ানো দিয়াসের বাড়ানো বলে তার প্রথম শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক দিনো, তবে বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে তালগোল পাকান। রদ্রিগোর দ্বিতীয় দুর্বল প্রচেষ্টা তার গায়ে লাগে, তৃতীয়বারের চেষ্টায় জালে বল পাঠিয়ে উল্লাসে মাতেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
কিন্তু ভিএআরে ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, রদ্রিগো স্কোরিং শট নেয়ার সময় বলের ওপর হাত ছিল গোলরক্ষকের।
পরের মিনিটে জিরোনার আলেইশ গার্সিয়াকে পেছন থেকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন টনি ক্রুস। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ক্রুসের এটি প্রথম লাল কার্ড। বাকি সময়ে রিয়ালও পারেনি উল্লেখযোগ্য কিছু করতে।
গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লাইপজিগের মাঠেও পুরোটা সময় নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি রিয়াল, শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে হেরেই যায় । সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে তো পারলই না, বরং পুরোটা সময় ধুঁকতে দেখা গেল তাদের।
শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে এখনো অপরাজিত রিয়াল এই নিয়ে আসরে দুটি ম্যাচে পয়েন্ট হারাল।
অবশ্য একটি পয়েন্ট পাওয়ায় আবারো বার্সেলোনাকে পেছনে ফেলেছে তারা। ১২ ম্যাচে ১০ জয় ও দুই ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৩২। এক পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা।